Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Student

বাড়িতে অনটন, পড়ার স্বপ্ন ফেলে আনারস ফেরি ফাইভের ছাত্রের

রহিমের বাবা পুরাতন মালদহের সাহাপুরের ছটপুর গ্রামে নতুন সংসার পেতেছেন। রহিমদের খোঁজ রাখেন না তিনি।

ইংরেজবাজার শহরে পসরা নিয়ে পঞ্চম শ্রেণির রহিম শেখ। নিজস্ব িচত্র

ইংরেজবাজার শহরে পসরা নিয়ে পঞ্চম শ্রেণির রহিম শেখ। নিজস্ব িচত্র

অভিজিৎ সাহা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

করোনা-আবহে বন্ধ স্কুল, টিউশন। উপার্জন কমেছে বিড়ি-শ্রমিক মায়ের। অনটনের সংসারে দু’বেলা জুটছে না ভরপেট খাবার। পড়াশোনা ফেলে তা-ই সাইকেল নিয়ে আনারস ফেরি করছে পঞ্চম শ্রেণির রহিম শেখ। পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্য হলেও করোনা-আবহে সে-ই হয়ে উঠেছে বাড়ির প্রধান রোজগেরে। তবে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে সরকারি চাকরি করার স্বপ্ন রয়েছে রহিমের।

ইংরেজবাজার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে যদুপুরের জহুরতলা কৃষ্ণপুর গ্রাম। সেই গ্রামেই বিড়ি শ্রমিক মা গুলনুর বিবির সঙ্গে দিদার বাড়িতে থাকে রহিম। সে জহুরাতলা হাজি মহম্মদ হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। রহিমের বাবা পুরাতন মালদহের সাহাপুরের ছটপুর গ্রামে নতুন সংসার পেতেছেন। রহিমদের খোঁজ রাখেন না তিনি। রহিমের দিদির ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিড়ি বেঁধে ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন গুলনুর। লকডাউন শুরু হতেই বন্ধ হয় বিড়ি বাঁধার কাজ। আনলক-পর্বে ফের কাজ শুরু হলেও তাতে গতি আসেনি।

এমন অবস্থায় সংসারের হাল ধরে রহিম। সে জানায়, গ্রামেরই এক পরিবারের কাছ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে সাইকেল কেনে। সাইকেল নিয়েই ভোরে বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শহরের নিয়ন্ত্রিত বাজারে চলে যায়। পাইকারি দরে আনারস কিনে ইংরেজবাজার শহরে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছে সে। রহিম বলে, “পাইকারি বাজারে আনারস ২০ টাকা দরে কিনে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করছি। ভোর থেকে দিনভর ঘুরে ২০০-২৫০ টাকা হাতে থাকছে। সেই টাকা এখন মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছি।”

আর পড়াশোনা?

আরও পড়ুন: এখনও আমপানের আবেদন, জমছে সিঁড়ির তলাতেই

রহিমের কথায়, “করোনার জন্য স্কুল, টিউশন বন্ধ রয়েছে। শুনেছি মোবাইল ফোনে পড়াশোনা হচ্ছে। তবে আমাদের বাড়িতে স্মার্টফোন নেই।” গুলনুর বিবি বলেন, “ছেলেমেয়ে ছোট থাকতেই স্বামী আমাদের ছেড়ে চলে যায়। অনটনের সংসারে নিরুপায় হয়ে অল্পবয়সেই মেয়ের বিয়ে দিতে হয়েছে। এখন ছেলেটাকেও পেটের জন্য কাজ করতে হচ্ছে।”

হাজি মহম্মদ হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক সাইদুর রহমান বলন, “মিড-ডে মিলের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। স্কুলের ৫০৮ জন পড়ুয়ার মধ্যে কিছু জন তা ফেরত দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে পড়ুয়াদের পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

আরও পড়ুন: অচেনা শত্রু কোভিডে কি ভীত চেনা শত্রু ডেঙ্গি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Coronavirus Lockdown Ingraj Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE