আচার্য-রাজ্যপালের কঠোর মন্তব্যের পরেও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের আন্দোলনে যবনিকা পতনের ইঙ্গিত নেই। বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত ভাবে নিজেদের দাবি পেশ করে ওই ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, আন্দোলন চলবে। উপাচার্যের গড়ে দেওয়া আলোচনা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসতেও রাজি নন তাঁরা।
ওই ছাত্রছাত্রীদের মূল দাবি, উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে ইস্তফা দিতে হবে। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বুধবার কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা পড়ুয়াদের কাজ নয়। তাঁরা যেটা করছেন, সেটাকে ‘ক্রাইম’ বা অপরাধা বলে চিহ্নিত করেন কেশরী। তা সত্ত্বেও এ দিন দাবিসনদ দাখিল করে ছাত্রছাত্রীরা পরিষ্কার করে দিয়েছেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলবে। রেজিস্ট্রারের কাছে দাবিপত্র পেশ করাটা সেই আন্দোলনেরই অঙ্গ।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা একের পর এক প্রেসিডেন্সি ছেড়ে চলে যাওয়ায় পঠনপাঠন মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ছাত্রছাত্রীরা পথে নেমেছেন। তাঁদের ঘেরাও-বিক্ষোভ অভব্য ও উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠায় সব শিবির থেকেই তার নিন্দা করা হয়। পদ্ধতিতে ‘ভুল’ ছিল বলে স্বীকার করেও আন্দোলন থেকে তাঁরা যে সরছেন না, পড়ুয়ারা তা জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যপালের বক্তব্য গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করে বলেও সমালোচনা করেছেন পড়ুয়ারা। ব্যক্তিগত কারণে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা তো প্রেসিডেন্সি ছাড়ছেনই। সেই সঙ্গে অনেক শিক্ষককে বদলি করে দেওয়ায় মার খাচ্ছে পঠনপাঠন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক শিক্ষকের বদলির কারণ নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে। এই ব্যাপারে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছেন তাঁরা। ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বহিরাগতদের তাণ্ডবের ঘটনায় অভিযুক্তেরা যাতে সাজা পায়, তার জন্য কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেছেন, ওই ছাত্রছাত্রীরা তা-ও জানতে চান। সেই সঙ্গে গত ২১ অগস্ট পুলিশ পড়ুয়াদের মারধর করলেও কর্তৃপক্ষ তার নিন্দা করে এখনও কোনও বয়ান দেননি কেন, তার সদুত্তর দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।