Advertisement
E-Paper

দাড়িভিটে শিক্ষকেরা স্কুলে যেতেই ঘিরে ধরে বিক্ষোভ

মঙ্গলবারের মতো এ দিনও পাঁচ শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে যান। তাঁদের পথ আটকান গ্রামবাসীরা। সেই দলে ছিলেন দুই নিহতের বাবা বাদল বর্মণ ও নীলকমল সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৫

প্রশাসনের নির্দেশ মেনেই স্কুলে পৌঁছতে চেয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কয়েক জন। বুধবার সকালে সেই মতো তাঁরা স্কুল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছন। কিন্তু দুই নিহত তরুণ রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের পরিবারের লোকেরা ততক্ষণে দাড়িভিট স্কুলের মাঠে জমা হয়েছেন। সঙ্গে কয়েক জন স্কুলের পোশাক পরা ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবক। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পথ আটকে তাঁরা ক্ষোভ উগড়ে দেন। বুঝিয়ে দেন, তাঁদের দাবি না-মানা অবধি স্কুল খুলতে দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবারের মতো এ দিনও পাঁচ শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে যান। তাঁদের পথ আটকান গ্রামবাসীরা। সেই দলে ছিলেন দুই নিহতের বাবা বাদল বর্মণ ও নীলকমল সরকার। পাশের দোকান থেকে বেঞ্চ জোগাড় করে তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেখানে বসিয়ে দেন। তার পর চলতে থাকে পরের পর প্রশ্ন— বাকি শিক্ষকেরা কোথায়? তাঁরা আসছেন না কেন? প্রধান শিক্ষকই বা গরহাজির কেন? তাঁকে ছাড়া এই পাঁচ জন কেন স্কুল খুলতে এলেন? এর মধ্যে স্কুলের দু’জন শিক্ষাকর্মীও পৌঁছন সেখানে।

স্কুলের সামনে ততক্ষণে দুই মা ঝর্ণা ও মঞ্জুর সঙ্গে জড়ো হয়েছেন জনা পনেরো ছাত্রী। তাঁরা প্রায় সকলেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির। ছিলেন রাজেশের খুড়তুতো বোন মৌ-ও। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘শিক্ষকেরা স্কুলে এসেছেন কেন? কে পাঠাল এখানে? দাদাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন? এমন শিক্ষা চাই না আমাদের। স্কুল বন্ধ থাকুক।’’

স্কুলের এক শিক্ষাকর্মীর দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন ছাত্রীরা। দশম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়া বিশ্বাস, একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শেফালি সিংহ, জবা হালদােররা বলেছে, ‘‘ঘটনার তদন্ত না-হওয়া পর্যন্ত স্কুল খুলুক— তা আমরাও চাই না। পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, সেটা ঠিক। তা বলে ওই দাদাদের যারা মেরেছে, তাদের কিছুই হবে না?’’ নিহত রাজেশের বাবা নীলকমল বলেন, ‘‘পরিচালন সমিতি, প্রশাসনের প্রতিনিধি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ সকলে আসুন। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা দরকার।’’

এই পরিস্থিতিতে বাকি অভিভাবকেরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই কয়েক জন অভিভাবক বলেন, ‘‘আমরাও চাই খুনিরা সাজা পাক। কিন্তু এখন তো আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার উপক্রম! তারা তো কোনও দোষ করেনি।’’

শিক্ষকদের দলে ছিলেন ইংরেজির শিক্ষক অনিল মণ্ডল। পরে তিনি বলেন, ‘‘অভিভাবকেরাই স্কুলে ঢুকতে নিষেধ করছেন! কী করব বুঝেই উঠতে পারছি না!’’ কিছুক্ষণ স্কুলের সামনে গাছতলায় কাটিয়ে ইসলামপুরে ফেরেন তাঁরা। এর
পরেই মহকুমা প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। ইসলামপুর মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘শিক্ষকদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। আমার কাছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসেছিলেন। ওঁরা জানালেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য শক্তিরঞ্জন মজুমদার কিন্তু বলেন, ‘‘স্কুল খোলানোর বিষয়টি প্রশাসনের কর্তাদের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।’’ বিজেপির তরফেও একই দাবি করা হয়েছে। অন্য দিকে, ‘বিজেপি রাজনীতি করছে’, এই অভিযোগ তুলেছেন ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল।
তিনি জানান, আগামী ২৭ অক্টোবর শুভেন্দু অধিকারী আবার ইসলামপুরে সভা করবেন।

Daribhit Islampur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy