প্রতীকী ছবি
আনন্দের খবর। সন্দেহ নেই। কিন্তু দুর্ভাবনাও যে এড়ানো যাচ্ছে না!
আনন্দ। কেননা আইআইটি জয়েন্টের মেধা-তালিকার প্রথম একশোয় গত বছর পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি নামই ছিল। এ বছর প্রথম পঞ্চাশে দু’টি জায়গা করে নিয়েছে বাংলা। মেধা-তালিকায় দেবাদিত্য প্রামাণিক ৩৮। দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্রী আইরিন ঘোষ আছেন ৪৫ নম্বরে। সারা দেশে মেয়েদের মধ্যে এ বার তিনিই প্রথম।
দুর্ভাবনা। কারণ, দেবাদিত্য বা আইরিন, কেউই আর রাজ্যের কোনও প্রতিষ্ঠানে পড়তে আগ্রহী নন। উচ্চশিক্ষার জন্য ভিন্ রাজ্যই তাঁদের পছন্দ। কয়েক দিন আগেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষার্থীদের এ রাজ্যে পড়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে। কেউ যেন বাংলা ছেড়ে না-যান। কিন্তু এই দুই কৃতীকে ধরে রাখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে, উচ্চশিক্ষায় বাংলা কি তার গরিমা এতটাই হারিয়েছে যে, কৃতিত্বের নজির গড়া ছেলেমেয়েদের ধরে রাখতে পারছে না? দুর্ভাবনা এটাই।
ঠিক কী কারণে বাংলায় পড়তে চান না দেবাদিত্য-আইরিন?
দেবাদিত্য বলেন, ‘‘কোথায় ভর্তি হবো, ঠিক করিনি। তবে ইচ্ছে আছে, বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেই যাব। কারণ, এ রাজ্যের প্রতিষ্ঠানের থেকেও সেখানে গবেষণার ভাল সুযোগ আছে।’’ আইরিনও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, উন্নত মানের পড়াশোনার জন্য তাঁর গন্তব্য আইআইটি মুম্বই।
অথচ গবেষণাই করতে চান দেবাদিত্য। সাফল্যের শিখর ছুঁয়েও ছোট বেলার গবেষণার ইচ্ছে থেকে সরতে রাজি নন কলকাতার বিড়লা হাইস্কুলের এই ছাত্র। জানালেন, ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রযুক্তি নিয়ে পড়ার জন্য নয়। শুধু নিজের মূল্যায়নের জন্যই জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বসেছিলেন।
দেবাদিত্য জানান, গবেষকদের জীবন ভীষণ ভাবে আকর্ষণ করে তাঁকে। গবেষকদের আবিষ্কারের কাহিনি পড়ে সব থেকে আনন্দ পান তিনি। তাই এত সাফল্যও বিন্দুমাত্র নড়াতে পারেনি তাঁকে। ‘‘জয়েন্ট দিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু আমি আন্তরিক ভাবে পদার্থবিদ্যার ভাল গবেষক হতে চাই,’’ বলেন দেবাদিত্য। রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম দেবাদিত্য। দ্বিতীয় আইরিন। সিবিএসই দ্বাদশেও মেধা-তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন আইরিন।
আইআইটি প্রবেশিকার দায়িত্বে থাকা আইআইটি মাদ্রাজ রবিবার ফল প্রকাশ করে জানায়, প্রায় এক লক্ষ ৭০ হাজার পড়ুয়া জেইই (মেন) পরীক্ষায় বসেছিলেন। তাতে সফল পরীক্ষার্থীরা জেইই (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষায় বসেন। আইরিন, দেবাদিত্যের মতো জেইই (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষায় সফল পড়ুয়ারা ২৩টি আইআইটি-তে ভর্তি হতে পারবেন। আইআইটি-তে আসন ১১ হাজারের কিছু বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy