Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Debjani Mukherjee

সারদায় এ বার সুদীপ্তের নিশানা সঙ্গী দেবযানীও

সুদীপ্তের দাবি, ওই এক কোটি টাকা নেওয়ার বিষয় দেবযানী সিবিআই ও রাজ্য সরকারের গঠিত সিটের তদন্তকারীদের কাছে লুকিয়েছেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫১
Share: Save:

এত দিন অভিযোগের তির ছিল রাজনৈতিক নেতাদের দিকে। এ বার জেলে বসে নিজেরই সহযোগী দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উগরে দিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন

অভিযোগ, নিজের বোনকে ডাক্তারি পড়াতে বেসরকারি কলেজে ভর্তি করানোর জন্য সুদীপ্তকে চাপ দিয়ে দেবযানী চেক ও নগদ মিলিয়ে এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন। সরাসরি কলকাতা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লেখা চিঠিতে সারদা কর্তা এই অভিযোগ এনেছেন।

উল্লেখ্য, সারদাকাণ্ডে ২০১৩ এপ্রিল মাসে তিনি দেবযানীকে সঙ্গে নিয়েই ফেরার হয়েছিলেন। পরে ডিসেম্বর মাসে জম্মু থেকে দু’জনকে একসঙ্গে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তখন থেকে দু’জনই জেলে রয়েছেন। সাত বছর ধরে রাজ্য পুলিশ ও পরে সিবিআই এবং ইডি-র তদন্ত চলাকালীন বার বার সুদীপ্ত ও দেবযানীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও উঠে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, অন্ধের মতো দেবযানীকে বিশ্বাস করতেন সুদীপ্ত। সুদীপ্তের সঙ্গে থেকে সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে দেবযানীর বিত্তশালী হয়ে ওঠার গল্পও অনেক শোনা গিয়েছে। যখনই আদালতে শুনানির দিন পড়েছে, দু’জনের দেখা হয়েছে। কখনও তাঁদের মধ্যে বৈরিতা দেখতে পাওয়া যায়নি। আচমকাই এত দিন পরে সরাসরি দেবযানীর নামে অভিযোগ তুলে কেন চিঠি দিলেন সুদীপ্ত, সেই প্রশ্ন উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: কিসান রেলের ‘ছদ্মনামে’ বঙ্গে ‘ভোট এক্সপ্রেস’-এর উদ্বোধন মোদীর

আরও পড়ুন: হোমগার্ডে বদলি ডায়মন্ড হারবারের সেই পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে

চিঠিতে সুদীপ্তের দাবি, ওই এক কোটি টাকা নেওয়ার বিষয় দেবযানী সিবিআই ও রাজ্য সরকারের গঠিত সিটের তদন্তকারীদের কাছে লুকিয়েছেন। তিনি এক কোটি টাকা নেওয়ার বিষয়টি তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের জানিয়েছেন। এই বিষয়ে দেবযানীর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার মক্কেল তদন্তকারী অফিসারদের কাছে সব কিছুই কবুল করেছেন।’’

ডিসেম্বরের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি দু’পাতার চিঠি লিখে নির্দিষ্ট কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার নাম করে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন সুদীপ্ত। সেই চিঠির ভিত্তিতে যাতে সিবিআই তদন্ত করে তার জন্য আদালতে আর্জি জানান, তৃণমূলের মুখপাত্র, এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ। সেই চিঠিতে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা, বর্তমানে বিজেপির মুকুল রায়ের নাম ছিল।

এ বারেও ২১ পাতার চিঠিতে অর্থ লগ্নি সংস্থার টাকা লুটের পিছনে প্রধানত মুকুল রায়কেই দায়ী করেছেন সুদীপ্ত। ধীরে ধীরে সারদা সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করেছেন ওই নেতা বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, দলীয় প্রয়োজনের নাম করে বিপুল পরিমাণ টাকা নেওয়ার পাশাপাশি তার কর্মচারীদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমানতকারীদের টাকাও লুট করেছেন মুকুল। শুধু টাকা লুটই নয়, অভিযোগ, নানাভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে বিভ্রান্ত করেছেন ওই নেতা। ২০১১ সালের পর থেকে শাসকদলের ওই প্রভাবশালী নেতা নানারকম সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামেও টাকা নিয়েছেন বলে চিঠিতে জানিয়েছেন সুদীপ্ত। যদিও সেই সব সুবিধা তিনি পাননি। এই প্রসঙ্গে তাঁর মত জানতে চেষ্টা করেও মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারককে লেখা ওই চিঠিতে সুদীপ্ত সারদা নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব মামলা এক জায়গায় নিয়ে এসে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করার আবেদন করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Debjani Mukherjee Saradha Scam Sudipta Sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE