কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
বিনা বিচারে বন্দি হয়ে থাকার অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। এ ব্যাপারে বন্দি হিসাবে আর্জিপত্র (প্রিজনার্স পিটিশন) জমা দিয়েছিলেন কোর্টে। আদালতের খবর, সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই জানিয়েছে যে তাদের চারটি মামলায় সুদীপ্ত জামিন পেয়েছেন। সেই রিপোর্ট সুদীপ্তকে যাচাই করতে পাঠিয়েছে কোর্ট।
২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হন সুদীপ্ত সেন এবং তাঁর সহযোগী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তে নামে। তার পরে এক দশক কেটে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। চার্জ গঠন, আর্থিক কেলেঙ্কারির বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্তের কী অবস্থা তাও কার্যত কেউ জানে না। এই মামলায় ধৃত নেতা, মন্ত্রী-সহ প্রভাবশালীরা জামিন পেলেও গোড়া থেকেই জেলে আটকে আছেন সুদীপ্ত-দেবযানী। বিচার প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে তাও কেউ জানে না। অনেকেই বলছেন, সুদীপ্ত-দেবযানীকে শেষ কবে সশরীরে কোর্টে হাজির করা হয়েছিল তাও অনেকে মনে করতে পারবেন না।
এই পরিস্থিতিতে জেল থেকেই হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন সুদীপ্ত। প্রসঙ্গত, এক সময় সুদীপ্তর হয়ে একাধিক আইনজীবী মামলা লড়লেও এখন তাঁর কোনও আইনজীবী নেই। আদালতের খবর, দেড় বছর ধরে মামলার শুনানি হচ্ছে না। তাঁকে যেন সশরীরে বা ভার্চুয়ালে, কোর্টে অন্তত হাজির করা হয় সেই আর্জিও জানিয়েছিলেন সারদা কর্ণধার। আইনজীবীদের একাংশের সন্দেহ, সিবিআই ছাড়াও রাজ্য পুলিশের কয়েকটি মামলায় হয়তো সুদীপ্ত অভিযুক্ত। সেই মামলাগুলির কী অবস্থা তাও জানা প্রয়োজন।
আইনজীবীদের অনেকেই মনে করছেন, এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি কী হতে পারে সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। সে দিক থেকে দশ বছর জেলবন্দি থাকার অর্থ বিনা বিচারেই কার্যত সাজা ভোগ করেছেন সুদীপ্ত ও দেবযানী। এই ভাবে কোনও অভিযুক্তকে বন্দি করে রাখা আদৌ সঙ্গত কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন অনেকের। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় মানিক ভট্টাচার্যকে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রেও জেল হেফাজতে থাকার সময়কে সাজার মেয়াদের সঙ্গে তুলনা করেছে হাই কোর্ট। সে দিক থেকে সুদীপ্ত-দেবযানীর বিনা বিচারে আটক থাকার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy