Advertisement
১৯ মে ২০২৪
BJP

বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন সুকান্তও!

বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বিধানসভায় খুব কমই বৈঠক করতে দেখা যায় দলের রাজ্য সভাপতিকে। পুজোর পরে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য এলেও সেখানে বৈঠক করেন সুকান্ত। তখনই ওঠে নানা প্রশ্ন।

বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার।

বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩৬
Share: Save:

১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে লড়াই তো রয়েছেই। আবার বিজেপির মধ্যেও এমন প্রশ্ন রয়েছে যে, এই রাজনৈতিক লড়াইয়ে ১০০ দিনের শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে না তো? এর প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না তো? শুক্রবার দলের বিধায়কদের মুখ থেকেই এমন সব প্রশ্ন শুনতে হল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে।

শুক্রবার দলীয় জনসভায় যোগ দিতে কৃষ্ণনগরে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই দিনেই দলের বিধায়কদের বিজয়া ও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে বিধানসভায় যান সুকান্ত। বিধায়কদের জন্য উপহার এবং মিষ্টিও নিয়ে যান। সৌজন্য পর্ব মিটে যাওয়ার পরে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের ঘরে একটি বৈঠক করেন সুকান্ত। সেখানে আসন্ন অমিত শাহের সভা থেকে রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়। বিজেপি সূত্রে খবর, এর মধ্যেই কয়েক জন বিধায়ক ১০০ দিনের টাকা কেন্দ্র আটকে রাখায় ভোটারদের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সুকান্ত জবাবে কেন টাকা আটকে রাখা হয়েছে তার ব্যাখ্যাও দেন। সূত্রের খবর, এর পরেও প্রশ্ন উঠলে সুকান্ত জানিয়ে দেন, এই বিষয়ে মানুষ কী বলছে তা বিধায়করা তাঁকে জানালে তিনি দিল্লিকে রিপোর্ট পাঠাবেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির কেউ এই আলোচনার কথা স্বীকার করেননি। সুকান্ত বলেন, ‘‘এটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। পুজোর পরে সকলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। তার পরে নানা বিষয়ে মত বিনিময় হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।’’

দলের অনেক বিধায়কই বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ যে রাজ্যে হচ্ছে না তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই এক বিধায়ক প্রশ্ন তোলেন, তৃণমূল যে ভাবে কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে বলে প্রচার করছে, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তার প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না তো? এর জবাবে সুকান্ত বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যের বেনিয়মের কথা এবং হিসাব না দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মোট টাকার একটি অংশ থাকে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ এবং বাকিটা নির্মাণ সামগ্রীর। বিজেপি শিবিরের অনেকেই মনে করেন, নির্মাণ সামগ্রীর টাকা বেনিয়মের কারণে আটকে রাখা হলেও যাঁরা কাজ করেছেন সেই শ্রমিকদের প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। শুক্রবার বিধানসভায় সুকান্তের বৈঠকেও সেই বিষয়টি ওঠে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এক বিধায়ক জানান, সুকান্ত প্রথমে যে সব জব কার্ড বাতিল হয়েছে তার মাধ্যমে বিপুল টাকার দুর্নীতির কথা বলেন। এর পরেও প্রশ্ন উঠলে তিনি জানান, বিধায়কেরা যে হেতু মানুষের কাছাকাছি থাকেন, তাই তাঁরাই ভাল জানবেন মানুষ কী বলছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সে কথা জানার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, বিধায়কদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি দিল্লিকে রিপোর্ট পাঠাবেন।

বিধানসভায় সুকান্ত পৌঁছানোর আগে আগেই ২৯ নভেম্বর দলের সমাবেশ ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে করার অনুমতি দিয়ে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপির ক্ষমতা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য বিধায়কদের আহ্বান জানান সুকান্ত। একই সঙ্গে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে সাধারণ মানুষকে নিয়ে পথে নামারও নির্দেশ দেন। রাজ্যে কী ধরনের দুর্নীতি হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ে সুকান্তের পাশাপাশি বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ীও সরব ছিলেন বলেই বিজেপির পরিষদীয় দল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Sukanta Majumdar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE