প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
সারদা মামলায় কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তারা আবার জেরা করতে চায় বলে সিবিআইয়ের দাবি। সেই কারণে ডিসেম্বরের শেষে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল সিবিআই। সেই আবেদনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অবমাননার মামলাও।
আজ, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলা উঠতে চলেছে। সূত্রের খবর, সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি এস আব্দুল নাজির এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে মামলাটি শুনানি হতে পারে। তালিকায় দু’নম্বরে থাকায় আজই তার শুনানি হতে পারে বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। এর আগেও কয়েক বার তালিকাভুক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত মামলাটির শুনানি হয়নি। আদালত সিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর করলে দেশ জুড়েই হইচই পড়ে যাওয়ার কথা। এই মুহূর্তে রাজ্যের একটি দফতরের সচিব পদে রয়েছেন রাজীব।
সিবিআইয়ের একটি মহল জানিয়েছে, ২০১৩ সালে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলায় রাজ্যের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল ‘সিট’-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখার দায়িত্বে ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করলে তাঁর সূত্রে অনেক রথী-মহারথী জড়িয়ে যেতে পারেন বলেও দাবি করা হচ্ছে। এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই শিলঙে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল রাজীবকে। যদিও সিবিআই দাবি করেছিল, বহু তথ্য তিনি জানাতে চাননি। ফলে, পরে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।
ইদানীং রাজীবের সঙ্গে বিজেপির এক সাংসদের সম্পর্ক নিয়েও প্রশাসনিক মহলে চর্চা রয়েছে। কারণ, ওই সাংসদ দিল্লিতে গিয়ে রাজীবের পক্ষে বিভিন্ন স্থানে সওয়ালও করেছেন। তা ছাড়া রাজ্যের এক সাংবিধানিক উচ্চপদাসীনের সঙ্গেও ওই আইপিএস অফিসারের বার্তা বিনিময় হয়েছে বলে নবান্নের কর্তারা জেনেছেন। এমন এক সময়ে সিবিআই ফের তাঁকে হেফাজতে
কেন নিতে চাইছে তা প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেরই বোধগম্য হচ্ছে না। এ দিন রাজীব কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই ২৭৭ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছে। রাজীব কুমার সিটের অন্যতম তদন্তকারী হয়েও কী ভাবে প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন, তা ওই হলফনামা মারফত জানানো হয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। সিবিআই জানিয়েছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সারদা-সহ সমস্ত অর্থ লগ্নি সংস্থার টাকা ও সুবিধা নিয়ে সর্বশেষ সুবিধা কারা ভোগ করেছিলেন তা তদন্ত করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজীব কুমার এ যাবৎ সহযোগিতা করেননি। ফলে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি।
সিবিআইয়ের দাবি, তারা সারদা মামলায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়কে রাজসাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি এখনও রাজি হননি। এক সিবিআই কর্তা জানাচ্ছেন, সারদা-সহ অর্থ লগ্নি সংস্থার তদন্ত এখনই শেষ হচ্ছে না। বিধানসভা ভোটের পরও তা চলবে। যাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করবেন না, তাঁদের অভিযুক্ত করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকবে না বলেও দাবি করেছেন সিবিআই কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy