Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্ট জুয়া খেলার জায়গা? এসএসসির নিয়োগবিধি নিয়ে মামলা খারিজ, ‘বঞ্চিত’দের ভর্ৎসনা বিচারপতির

আদালত কোথাও বলেনি, পুরনো বিধি অনুযায়ীই নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগবিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কমিশনের রয়েছে, জানিয়েছে আদালত।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৭
এসএসসির নিয়োগবিধি নিয়ে ‘বঞ্চিত’দের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে।

এসএসসির নিয়োগবিধি নিয়ে ‘বঞ্চিত’দের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে। —ফাইল চিত্র।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নতুন নিয়োগের বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছিল, তা খারিজ করে দেওয়া হল। সেই সঙ্গে মামলাকারীদের উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট কি জুয়া খেলার জায়গা?’’

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এসএসসির বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে করা এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কারণ আদালত নির্দেশে কোথাও বলেনি, পুরনো বিধি অনুযায়ীই নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগবিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কমিশনের রয়েছে, জানিয়েছে আদালত। মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই শোনার পর মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছিলেন। তা শুনেই বিচারপতি অসন্তুষ্ট হন। কারণ তত ক্ষণে ওই মামলার শুনানি বেশ কিছুটা হয়ে গিয়েছিল। বিচারতি জানান, মামলা প্রত্যাহার করা হবে না। তা খারিজ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের এমন আচরণ দুর্ভাগ্যজনক।

২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু তাতে বেশ কিছু আপত্তি তুলে হাই কোর্টে যান চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে অপেক্ষমাণ তালিকায় (ওয়েটিং লিস্ট) থাকা প্রার্থীরাও ছিলেন। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ এই সংক্রান্ত সকল মামলা খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। এটা সত্য যে, কমিশন এবং পর্ষদই বর্তমান অচলাবস্থার জন্য দায়ী। কিন্তু দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা এখন লক্ষ্য। না হলে আগামী দিনে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।

বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার এই মামলার শুনানি হয়েছে। মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতি কুমারের প্রশ্ন, ‘‘আপনারা কারা? যোগ্য না অযোগ্য? অযোগ্যদের তো বার করে দেওয়া হয়েছে।’’ এর পর তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা কোথাও বলিনি যে আগের বিধি মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আমাদের রায় দেখুন। আমরা বলেছি নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে। কোনও বিধির কথা বলিনি। এসএসসি একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। এই অবস্থায় নিয়োগ নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’’

যাঁরা ‘বঞ্চিত’, তাঁদের যোগ্য বা অযোগ্য কোনও তালিকাতেই ফেলা যায় না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই মামলাকারীরা নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হননি। তা হলে তাঁদের দাবির গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারে কী ভাবে? উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। তার ফলে ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে যায়। ওই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি কুমারও। সোমবার এই সংক্রান্ত মামলায় তাঁর মন্তব্য, ‘‘আদালত বিবেচনা করেই রায় দেয়। সে সময় প্রধান বিচারপতি রায় ঘোষণার আগে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। আমি সেই রায়ের সঙ্গেও সহমত হয়েছিলাম। তার পর রায় ঘোষিত হয়েছে। দুঃখিত, আপনাদের দাবি মানতে পারছি না।’’ এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে আদালত মনে করছে না, জানান বিচারপতি কুমার।

‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীদের তরফে বিকাশরঞ্জন ছাড়াও এই মামলা লড়েছেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এ ছাড়া, এসএসসির তরফে ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Bengal SSC Recruitment Case Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy