পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের কাছে হলফনামা চাইল সুপ্রিম কোর্ট। দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। এই মামলায় অয়ন শীলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিনি ইডির মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁর জামিনের শুনানিতে আইনজীবীকে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আপনার মক্কেলই তো আসল অপরাধী।’’ অয়নের আইনজীবী অবশ্য জামিনের সপক্ষে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন। তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে হলফনামা তলব করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পিএস নরসিমা এবং বিচারপতি অতুল এস চন্দুকরের বেঞ্চে সোমবার অয়নের জামিনের মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল। বিচারপতিরা আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার মক্কেলের বিরুদ্ধে তো উত্তরপত্রে কারচুপি, নম্বরে কারচুপি এবং অযোগ্যদের চাকরিতে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আপনার মক্কেলই তো আসল অপরাধী।’’ অয়নের আইনজীবী এর পর আদালতে বলেন, ‘‘এটা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নয়। এটা পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। আমার মক্কেল ইডির মামলায় জামিন পেয়েছেন। ১৭টি পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই চারটি পুরসভায় তদন্ত করে থেমে গিয়েছে। দু’বছরের কাছাকাছি আমার মক্কেল জেলে রয়েছেন। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’’
আরও পড়ুন:
এর পর সিবিআইয়ের কাছে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষ হতে আর কত দিন সময় লাগবে? দুর্নীতির অভিযোগে এখনও পর্যন্ত কত জন পুরসভার চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে? এ সবই হলফনামা আকারে জানাতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, পুর-নিয়োগ মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে নতুন নতুন অনেক তথ্যও জানা যাচ্ছে। এখানে অয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তিনি বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছেন অনেককে। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত হবে না। এখনও পর্যন্ত এক জন পুর-চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আদালতে জানায় সিবিআই।
উল্লেখ্য, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অয়নকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল ইডি। তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর উত্তরপত্র বা ‘ওএমআর শিট’ পাওয়া গিয়েছিল। সেখান থেকেই পুরসভার নিয়োগে দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। অয়নের সংস্থাই পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল বলে অভিযোগ। তার পর থেকে তিনি জেলে। সিবিআইয়ের মামলা থেকে জামিন চেয়ে এর আগে অয়ন কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছিলেন। সেখানে আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। এ বার সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলায় সিবিআইয়ের কাছে হলফনামা চাইল।