Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে সাসপেন্ড আনিসুর দল বদলে বিজেপিতে

আনিসুরের দলবদল অবশ্য এই প্রথম নয়। একসময় দলবিরোধী কাজের জন্য সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। তৃণমূলে এসে পাঁশকুড়ার কাউন্সিলর এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি হন আনিসুর। তবে বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩১
দলবদল: বিজেপির মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) আনিসুর রহমান, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সুভাষ সরকার এবং অন্তরা ভট্টাচার্য। শনিবার সবংয়ের সভায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

দলবদল: বিজেপির মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) আনিসুর রহমান, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সুভাষ সরকার এবং অন্তরা ভট্টাচার্য। শনিবার সবংয়ের সভায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

তৃণমূল তাঁকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছিল। হারিয়েছিলেন পুরপ্রধানের পদও। এমন কোণঠাসা অবস্থায় বিজেপি-তেই যোগ দিলেন পাঁশকুড়ার নেতা আনিসুর রহমান। শনিবার সবংয়ে বিজেপির উপ-নির্বাচনের প্রচারসভায় দলবদল করেন তিনি।

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা রাজনীতিতে অধিকারীদের বিরোধী ও মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন আনিসুর। মুকুলের হাত ধরেই তাঁর দলবদল বলে জানা গিয়েছে। এ দিন সবংয়ের সভাতেও মুকুলের সঙ্গেই মঞ্চে ওঠেন আনিসুর। তাঁর হাতে পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরে আনিসুর বলেন, ‘‘তৃণমূলে একটা দমবন্ধ করা পরিস্থিতি চলছে। জেলা থেকে রাজ্য, সর্বত্র পরিবারতন্ত্রের দাপট। দলটা ‘প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’ হয়ে গিয়েছে।’’ কিন্তু বিজেপি কেন? আনিসুরের জবাব, ‘‘মানুষের জন্য কাজ করতে হলে বিজেপি ছাড়া বিকল্প নেই।’’

সবং হাইস্কুল মাঠে এ দিনের সভায় ছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় নেতা সুরেশ পূজারী, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিংহ, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার প্রমুখ। সকলেই আগাগোড়া তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেন। কটাক্ষ করেন মানস ভুঁইয়ার দলবদল নিয়েও। তবে সব ছাপিয়ে সভার আকর্ষণ ছিল আনিসুরের দলবদল।

আরও পড়ুন: নিম্নচাপের পথ বদল, বৃষ্টিভেজা দক্ষিণবঙ্গ

আনিসুরের দলবদল অবশ্য এই প্রথম নয়। একসময় দলবিরোধী কাজের জন্য সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। তৃণমূলে এসে পাঁশকুড়ার কাউন্সিলর এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি হন আনিসুর। তবে বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। গত বছর পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রীর বিরুদ্ধে আনিসুর-অনুগামীদের আনা অনাস্থা পাশ হওয়ায় জেলা যুব তৃণমূল সভাপতির পদ হারান আনিসুর। আর চলতি বছরে পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান পদ নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। দলের মনোনীত প্রার্থী নন্দকুমার মিশ্রের বিরুদ্ধে ভোটাভুটিতে গিয়ে পুরপ্রধান হন আনিসুর। তারপরই তৃণমূল তাঁকে সাসপেন্ড করে।

এরপরে চাপের মুখে পুরপ্রধান পদে ইস্তফা দিলেও নিয়ম মেনে তা বোর্ড মিটিংয়ে পাশ করাননি আনিসুর। ফলে, খাতায়কলমে তিনিই ছিলেন পুরপ্রধান। তবে ক’দিন আগে পুর-দফতর নিয়মভঙ্গের অভিযোগে পুরপ্রধান পদ থেকে আনিসুরকে অপসারণ করে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন আনিসুর। এ দিনও তিনি বলেন, ‘‘আমিই পাঁশকুড়ার চেয়ারম্যান। অনৈতিক ভাবে আমাকে সরানোর চেষ্টা চলছে।’’

পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক আনিসুরের পাঁশকুড়া শহরে নার্সিংহোম ও বিএড কলেজ রয়েছে। সে সব নির্বিঘ্নে চালাতেই তিনি বিজেপি-র মতো সর্বভারতীয় দলে যোগ দিলেন বলে মনে করছেন জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।
তবে এতে আখেরে বিজেপি-র লাভ হবে দাবি দলীয় নেতৃত্বের। বিজেপি-র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের মতে, ‘‘আনিসুরের মতো দক্ষ সংগঠক আসায় জেলায় আমাদের শক্তি বাড়বে।’’ যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী এ সবে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এমন কেউ এলে বা গেলে তৃণমূলের কিছু যায় আসে না।’’

আনিসুর রহমান পাঁশকুড়া তৃণমূল বিজেপি BJP TMC Anisur Rahman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy