পাকিস্তান থেকে প্রাণনাশের হুমকি ফোন পেয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসবাদীদের ‘সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়’ হয়ে ওঠায় তাঁকে এ সব হুমকি পেতে হচ্ছে বলে শুভেন্দুর দাবি। ঘটনাচক্রে, যে দিন দিল্লিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে শুভেন্দু দেখা করতে গিয়েছিলেন, সে দিনই তিনি এই হুমকি পান।
দু’দিন আগে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার শুভেন্দু দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখানে শাহের সঙ্গে শুভেন্দুর একান্ত বৈঠক হয়। মূলত পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক বিষয় নিয়েই কথা হয়। সে দিনই তিনি হুমকি-ফোন পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ‘হুমকি’র একটি অডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে বক্তা হিন্দিতে বলছেন, ‘‘আমি পাকিস্তান থেকে বলছি। একটু সাবধানে থাকবেন। না হলে উড়ে যাবেন। কত জন বিএসএফ উড়ে গেল ভারতে! উড়ে যাবেন। একটু সাবধান হয়ে যান।’’ এই হুমকির কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককেও শুভেন্দু জানিয়েছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের দাবি।
যে নম্বর থেকে বিরোধী দলনেতার কাছে ফোন এসেছিল বলে জানানো হয়েছে, সেই নম্বরটি কিন্তু পাকিস্তানের নম্বর নয়। নম্বরটি অডিয়ো ক্লিপের সঙ্গেই প্রকাশ করা হয়েছে। +৯৬৬ দিয়ে ফোন নম্বরটি শুরু হয়েছে। এটি সৌদি আরবের টেলিফোন কোড। কিন্তু ‘হুমকি-অডিয়োয়’ বলা হয়েছে ‘পাকিস্তান থেকে বলছি’।
‘হুমকি’র ভাষা শুনে মনে হয়েছে, ‘হুমকিদাতা’ হিন্দিতে তেমন স্বচ্ছন্দ নন। উচ্চারণ বা বাক্যের গঠন, কোনওটাই সাবলীল নয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, বাংলাদেশিদের একাংশের হিন্দি উচ্চারণের সঙ্গে ওই ‘হুমকি-অডিয়ো’র হিন্দি উচ্চারণের মিল রয়েছে। তাই কেউ কেউ সন্দেহ করছেন যে, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়া কোনও ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন করে ওই হুমকি দিয়ে থাকতে পারেন। শুভেন্দু নিজেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশ থেকে তিনি রোজ হুমকি-বার্তা পান।
‘হুমকি-ফোন’ সম্পর্কে শুভেন্দু বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘এই রাজ্য সন্ত্রাসবাদীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। এখানে নাশকতা হয় না, তার কারণ এই চরমপন্থী শক্তিগুলি মনে করে, এটা তাদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, তাই এটা ওদের জন্য নিরাপদ জায়গা। আর আমরা থ্রেট কল (হুমকি-ফোন) খাই।’’ শুভেন্দুর কথায়, ‘‘আমি দু’দিন আগেই পাকিস্তান থেকে থ্রেট কল পেয়েছি। বাংলাদেশ থেকে তো রোজ করে।’’