তাঁকে দেখে সেনা ‘ছুটে পালিয়েছে’ বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছিলেন, তাকে কেন্দ্র করে আরও সুর চড়াল বিজেপি। অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকদের ধর্না-মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বলতে গিয়ে মমতাই পালিয়েছিলেন বলে দাবি করে ‘ছারপোকা’র তুলনা টানলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী! আনলেন ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’য়ের প্রসঙ্গও। বিজেপির বিরুদ্ধে সেনাকে নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মেয়ো রোডে তৃণমূলের মঞ্চ সেনা খুলে দেওয়ার পরে মমতা সেনাকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। পাশাপাশি, মমতা দাবি করেছিলেন, তাঁকে দেখে দু’শো জন সেনা ছুটে পালাচ্ছিলেন। এই প্রেক্ষিতে সেনাকে অপমানের প্রতিবাদে আদালতের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি নিয়ে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে এ দিন ধর্নার ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের একাংশ। সেখানে যোগ দিয়ে বিরোধী নেতা বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী শুনে রাখুন, সেনারা আপনাকে দেখে পালায়নি। অবৈধ কাঠামো তুলে দেওয়ায় আপনি লেজ গুটিয়ে পালিয়ে ডোরিনা ক্রসিংয়ে চলে গিয়েছেন! আপনাকে, ছারপোকাদের দেখে সেনা পালাবে কেন? আমাদের দেশের সেনাদের দেখে চিন পালায়। পাকিস্তান পা ধরে বলে, ‘সব বিমানবন্দর ভেঙে দিলেন। আপনারা থামুন।’” শুভেন্দুর সংযোজন, “দেশের মধ্যে অনেক ‘টুকড়ে-টুকড়ে গ্যাং’ আছে। মমতার আচরণও তেমনই।” মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করে এর আগে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সেনা সর্বাধিনায়কের (সিডিএস) কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন শুভেন্দু।
যদিও শুভেন্দুকে নিশানা করে পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “উনি ওঁর দলেই কোণঠাসা। বিধানসভাতেও (বিজেপি) হারতে চলেছে আবার। হতাশা থেকে এই সব বলছেন। এগুলো সংসদীয় ভাষা? ওখানে (শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতাদের) যাওয়াটাই সেনাকে নিয়ে রাজনীতি করা।”
প্রসঙ্গত, আদালতের শর্ত ছিল, কর্মসূচিতে কোনও দলীয় পদাধিকারী থাকতে পারবেন না। ধর্না-মঞ্চে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর সঙ্গেই ছিলেন বিজেপি নেতা তাপস রায়, অর্জুন সিংহ, দলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ প্রমুখ। এই প্রেক্ষিতে আদালতের শর্ত লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। এই নিয়ে সাময়িক উত্তেজনাও তৈরি হয়। যদিও শুভেন্দুর দাবি, “উপস্থিত কেউ বিজেপির রাজ্য কমিটির পদাধিকারী নন। বিরোধী দলনেতাও সাংবিধানিক পদ। সুতরাং আদালতের নির্দেশ অমান্যের প্রশ্নই ওঠে না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)