Advertisement
E-Paper

জেলাস্তরে নজরদারি ডাক্তার, নার্সিংহোমে

সরকারি সূত্রের খবর, বর্তমানে স্বাস্থ্যসাথী বাবদ বছরে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে রাজ্যকে। কোষাগারের যে হাল, তাতে ওই খরচের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। তাই সরকারি চিকিৎসকদের গতিবিধিতে নিয়ন্ত্রণ চাইছে রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৪
নজরদারি শুরু করতে চলেছে প্রশাসন।

নজরদারি শুরু করতে চলেছে প্রশাসন। প্রতীকী ছবি।

স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা না-দিলে বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য এক শ্রেণির চিকিৎসককে ‘নজরে’ রাখার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। নবান্ন সূত্রের খবর, এ বার সেই নজরদারি শুরু করতে চলেছে প্রশাসন। জেলাশাসকেরা বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলির (প্রধানত যেগুলি স্বাস্থ্যসাথীর তালিকাভুক্ত) পরিকাঠামো ও পরিষেবা খতিয়ে দেখবেন। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা সরকারি চিকিৎসকদের গতিবিধি নজরে রাখবেন। এ নিয়ে সব জেলা প্রশাসনকে লিখিত নির্দেশও পাঠানো হয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, পরিষেবার উপর নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের মান (গ্রেড) নির্ধারণ হয়। যে হাসপাতাল-নার্সিংহোমের গ্রেড ভাল, তাদের চাহিদা তুলনায় বেশি। এই গ্রেড পাওয়া নিয়ে অনেক ধরনের ‘অসাধু’ কার্যকলাপের অভিযোগ পাচ্ছে প্রশাসন। অর্থাৎ, মানদণ্ডে যাদের তৃতীয় স্থানে থাকার কথা, তারা থাকছে শীর্ষ স্থানে। যাদের পরিষেবা বাস্তবে ভাল, তারা পিছিয়ে পড়ছে। নবান্নের নির্দেশে এ বার জেলাশাসকেরা তাঁদের এলাকায় হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলির প্রকৃত ছবি খতিয়ে দেখবেন। জেলাশাসকদের বলা হয়েছে, আগে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পটি বিমা-ভিত্তিক ছিল। এখন তা অ্যাসিওরেন্স নির্ভর। ফলে সেই প্রকল্পের নথিবদ্ধ বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে ৩০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলাগুলিকে। তাতে সেগুলির প্রতিটি পরিকাঠামোই যথোপযুক্ত ভাবে বিধির মান্যতা পাচ্ছে কি না, তাও যাচাই করতে হবে। তবে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলি যথেষ্ট ‘প্রভাবশালী’। তাই তারা প্রভাব খাটাতে পিছপা হয় না। সেই প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে পদক্ষেপ করা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।

পাশাপাশি, প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ‘নন-প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওন্স’ অনেকদিন থেকেই চালু রেখেছে রাজ্য। অর্থাৎ, যাঁরা সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে বাইরের বেসরকারি জায়গায় রোগী দেখবেন না, তাঁরা পাবেন ওই বিশেষ ভাতা। ওই ভাতা না-নিলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘কনসালট্যান্ট’ হিসাবে চিকিৎসকেরা যুক্ত হতে পারেন। কিন্তু সরকার লক্ষ্য করেছে, এক শ্রেণির চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালে সময় দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশি সময় দিচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবা ব্যহত হচ্ছে, তেমনই বেসরকারি জায়গায় স্বাস্থ্যসাথীর খরচ হচ্ছে অনেক বেশি। অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথীর প্যাকেজের মধ্যেই যেহেতু চিকিৎসকের ‘ফি’ ধরা থাকে, তাই এই প্রবণতা বাড়ছে। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে প্রশাসনের শীর্ষমহলে।

সরকারি সূত্রের খবর, বর্তমানে স্বাস্থ্যসাথী বাবদ বছরে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে রাজ্যকে। কোষাগারের যে হাল, তাতে ওই খরচের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। তাই সরকারি চিকিৎসকদের গতিবিধিতে নিয়ন্ত্রণ চাইছে রাজ্য। কারণ, ‘কনসালট্যান্ট’ হওয়া পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। তবে নজরদারির মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালে ‘ফাঁকি’ বন্ধ করা যেতে পারে। নবান্নের এক কর্তার কথায়, “সরকারি বেতনভুক চিকিৎসকেরা সরকারি হাসপাতালে কী দায়িত্ব পালন করবেন, তা নির্দিষ্ট আছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাই চিকিৎসকদের জন্য নিয়ম-বিধি স্থির করবেন। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য-কর্তারা নজরে রাখবেন, যাতে এর অন্যথা কোনও ভাবেই না হয়।”

Hospitals West Bengal Swasthya Sathi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy