Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
WBBSE

WBBSE: পাঠ-প্রকল্পই মেলেনি, শিক্ষণ নিয়ে চিন্তা স্কুলে

উত্তর কলকাতার একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক আইসানুল হক জানান, তাঁর ছেলের স্কুলে ইতিমধ্যে প্রথম সামেটিভের রুটিন দিয়ে দিয়েছে। অথচ সব বই এখনও হাতে পায়নি পড়ুয়ারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২২ ০৭:৪৫
Share: Save:

অতিমারি অতীত হয়নি। তবে তার দাপট খর্ব হতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কাজকর্মের সঙ্গে স্কুল-সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে চিরাচরিত অফলাইন মোডে অর্থাৎ শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা শুরু হয়ে গিয়েছে তা-ও প্রায় দেড় মাস হতে চলল। কিন্তু করোনাকালে পড়াশোনার ক্ষত ও ক্ষতি সারাতে যে-তৎপরতা, তার অভাব দেখে শিক্ষা শিবির উদ্বিগ্ন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা পাঠ্যক্রম কমিটি স্কুলগুলির কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও ‘অ্যাকাডেমিক প্ল্যান’ বা পাঠ-প্রকল্প পাঠিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে সারা বছর কী ভাবে পড়াশোনা হবে, কখন কখন নেওয়া হবে পরীক্ষা, ইত্যাদি বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে স্কুলগুলিতে।

পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কী ভাবে পঠনপাঠন চলবে, কখন কেমন পরীক্ষা নিতে হবে, তার একটা ‘অ্যাকাডেমিক প্ল্যান’ করা হয়। এখন প্রতি বছর তিনটি ‘সামেটিভ’-এ পরীক্ষা হয়। প্রথম সামেটিভ হয় এপ্রিলে। পরেরটা হয় অগস্ট নাগাদ। তার পরের এবং শেষ সামেটিভ পরীক্ষা নেওয়া হয় নভেম্বরে। এই সব পরীক্ষার উপরে ভিত্তি করেই শেষে হয় পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক মূল্যায়ন।

প্রশ্ন উঠছে, এ বার কি নির্দিষ্ট সময়ে প্রথম সামেটিভ পরীক্ষা হবে? যদি হয়, তার জন্য লেখাপড়াটা হবে কবে? অনেক স্কুলই জানাচ্ছে, এখনও প্রথম সামেটিভের পাঠ্যক্রম পড়ানো শুরুই হয়নি। কিছু স্কুলে অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝাঁপবেড়িয়া স্কুলের শিক্ষক অনিমেষ হালদার জানান, এখনও বহু স্কুলে পুরনো ক্লাসের পড়া ঝালাই করার জন্য সেতু পাঠ্যক্রম পড়ানোর কাজ চলছে। করোনার দরুন প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় ওই সেতু পাঠ্যক্রম পড়ানোটা খুব জরুরি। অনিমেষবাবু বলেন, ‘‘সেতু পাঠ্যক্রম শেষ হয়নি বলেই নতুন পাঠ্যক্রমের পড়া শুরু করা যায়নি অনেক স্কুলে। আবার এখন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হলে তখনও বন্ধ থাকবে স্কুল। তা হলে কখন সেতু পাঠ্যক্রম শেষ করে নতুন পাঠ্যক্রম শুরু হবে? সে-ক্ষেত্রে এপ্রিলে যে-প্রথম সামেটিভ হওয়ার কথা, সেটা কি পিছিয়ে যাবে? একেবারে অন্ধকারে রয়েছে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা।’’

ওই শিক্ষক জানান, প্রতি বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে ‘অ্যাকাডেমিক প্ল্যান’ না-দিলেও চলে। কিন্তু এই বছরটা তো ব্যতিক্রম। প্রায় দু’বছর পরে স্কুল খুলেছে। চলতি বছরে ‘অ্যাকাডেমিক প্ল্যান’ থাকা তাই জরুরি।’’

উত্তর কলকাতার একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক আইসানুল হক জানান, তাঁর ছেলের স্কুলে ইতিমধ্যে প্রথম সামেটিভের রুটিন দিয়ে দিয়েছে। অথচ সব বই এখনও হাতে পায়নি পড়ুয়ারা। কিছু পড়ুয়া সদ্য বই পেতে শুরু করেছে। চলছে সেতু পাঠ্যক্রম পড়ানোর কাজ। এই অবস্থায় আমার ছেলে কী ভাবে প্রথম সামেটিভের পরীক্ষা দেবে? আগে প্রথম সামেটিভের পাঠ্যক্রম শেষ হোক। তার পরে তো পরীক্ষা।’’ অতনু রায় নামে অন্য এক অভিভাবক বলেন, ‘‘এ বার তো স্কুল খোলার মাসখানেকের মধ্যেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল। ওরা পড়ার সুযোগ পেল কখন? এ ভাবে চললে এই বছরেও তো ওদের পড়াশোনায় অনেক খামতি থেকে যাবে।’’

সিলেবাস বা পাঠ্যক্রম কমিটির এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা ১৬ মার্চ শেষ হলেই আশা করা যায়, স্কুলগুলিতে অ্যাকাডেমিক প্ল্যান দিয়ে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WBBSE Education system
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE