Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Schools

Schools: রোজ আসুক চার শ্রেণি, চান বহু শিক্ষকই

১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার পরে প্রথমে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সকলে রোজ স্কুলে আসছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের গরহাজিরা ক্রমশ বাড়ছিল।

ছাত্রছাত্রীদের গরহাজিরা ক্রমশ বাড়ছে।

ছাত্রছাত্রীদের গরহাজিরা ক্রমশ বাড়ছে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৫:০৮
Share: Save:

করোনা আবহে বিধি মেনে পঠনপাঠন চালাতে সুবিধা হবে ভেবেই নবম থেকে দ্বাদশ, এই চার শ্রেণির ক্লাসের দিন ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সুবিধার তুলনায় অসুবিধা কিছু কম হচ্ছে না বলে শিক্ষক শিবিরের অভিমত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দু’-একটি ক্লাস নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে শিক্ষকদের। এই অবস্থায় শিক্ষক শিবিরের একাংশ চাইছেন, দিন বিভাজন তুলে দিয়ে পুরনো নিয়ম ফিরিয়ে আনা হোক। চার শ্রেণির সব পড়ুয়া রোজই স্কুলে আসুক। এখন ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার যা, তাতে একই দিনে ওই চার শ্রেণির পড়ুয়ারা এলেও করোনা বিধি মেনে ক্লাস করতে কোনও অসুবিধা হবে না।

১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার পরে প্রথমে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সকলে রোজ স্কুলে আসছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের গরহাজিরা ক্রমশ বাড়ছিল। বাড়তি সময় কাজ করার ব্যবস্থায় ক্ষোভ বাড়ছিল শিক্ষক শিবিরেও। এক সপ্তাহের মধ্যেই স্কুল শুরুর সময় পরিবর্তন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানায়, সোমবার থেকে শুক্রবার স্কুল বসবে সকাল ১০টা ৫০ মিনিয়ে এবং ছুটি হবে বিকেল সাড়ে ৪টেয়। আর ওই চার শ্রেণির পড়ুয়াদের রোজ আসার দরকার নেই। সোম, বুধ ও শুক্রবার স্কুলে আসবে দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়ারা। মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ক্লাস নবম ও একাদশ শ্রেণির।

শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দিন ভাগ করে দেওয়ার পরে গরহাজিরার ছবি বিশেষ বদলায়নি। সব থেকে কম ছাত্রছাত্রী আসছে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। তার একটা কারণ হতে পারে এই যে, নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা কিছু দিনের মধ্যেই দশম শ্রেণিতে উঠে যাবে। তাই তাদের অনেকেই এখন আর স্কুলে আসতে চাইছে না। একাদশের যে-সব পড়ুয়ার ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয় আছে, তারাই স্কুলে আসছে কিছু বেশি সংখ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র জানান, তাঁদের স্কুলে ওই দু’দিন পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশেরও কম। রোজ সব ক্লাস হলে পাঠ্যক্রমটাও দ্রুত শেষ হত। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের জন্য নবম শ্রেণির কিছু পড়ুয়া স্কুলে আসছে। এই নথিভুক্তি হয়ে গেলে হাজিরা আরও কমবে।’’

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘রোজ হাজিরা দিতে না-হলে অনেক সময় স্কুলে যাওয়ার ব্যাপারে অনীহা তৈরি হয়। এখন কোনও পড়ুয়া এক দিন স্কুল কামাই করলেই তার হাজিরার ব্যবধান অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে। এতে পড়া বুঝতে অসুবিধা হয়।’’ সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘সব শ্রেণি রোজ না-আসায় দৈনন্দিন ক্লাস কমে গিয়েছে শিক্ষকদের। প্রতিদিন তাঁদের বড়জোর একটি বা দু’টি ক্লাস নিতে হচ্ছে।’’

বিপরীত ছবি যে নেই, তা নয়। যোধপুর পার্ক বয়েজ় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানান, নবম শ্রেণির বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করায় তাঁর প্রতিষ্ঠানে ওই শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার ভালই।

শিক্ষকদের অন্য একটি অংশের প্রশ্ন, নবম থেকে দ্বাদশের সব পড়ুয়া রোজ স্কুলে এলে করোনা বিধি মেনে ক্লাস করতে অসুবিধা হবে না তো? যে-সব স্কুলে একটি বিষয়ে শিক্ষক মাত্র এক জনই, সেখানে কী হবে?

তবে প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বেশির ভাগ স্কুলেই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার এখন কম। তাই পড়ুয়ারা আপাতত রোজই আসুক। পরে পরিস্থিতি পাল্টালে না-হয় নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Covid 19 Teachers WBBSE
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE