Advertisement
E-Paper

ফলতায় ধর্ষণের পর ধড়-মুণ্ড বিচ্ছিন্ন করে খুন ছাত্রীকে, গ্রেফতার কাকা

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গ্রামেরই সিদ্দিকুল্লা (বাবুলাল) খাঁ নামে এক যুবক ওই কাণ্ড করেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০৩:৫৫
এই পুকুর থেকে মিলেছে কিশোরীর মুণ্ড। —নিজস্ব চিত্র।

এই পুকুর থেকে মিলেছে কিশোরীর মুণ্ড। —নিজস্ব চিত্র।

দু’দিন আগে টিউশন নিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। রবিবার সকালে গ্রামের একটি পুকুরের ধারে মেলে তার পোশাক। অন্য পুকুরের পাঁকের মধ্যে মেলে মুণ্ড। আর একটি পুকুরের ধারের মাটি খুঁড়ে মেলে ধড়।

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গ্রামেরই সিদ্দিকুল্লা (বাবুলাল) খাঁ নামে এক যুবক ওই কাণ্ড করেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। বাবুলাল ওই ছাত্রীর দূর সম্পর্কের কাকা। তাকে মারধর করে গ্রামবাসী পুলিশের হাতে তুলে দেন। ভাঙচুর চালানো হয় তার বাড়িতেও। পুলিশের অনুমান, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সুপার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই বাবুলাল কিশোরীকে খুন করেছে। বাবুলাল এবং তার বন্ধু রাজু খাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত কিনা, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবুলাল কয়েক বছর ধরে ওই ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন করছিল। কিন্তু ছাত্রীটি সাড়া দেয়নি। এ নিয়ে দুই পরিবারে কয়েকবার অশান্তিও হয়েছে। গত বছর বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। পুলিশ ধমক দেওয়ায় কিছুদিন চুপচাপ হয়ে গেলেও বাবুলাল ছাত্রীটিকে বিরক্ত করা ছাড়েনি বলে অভিযোগ।

শুক্রবার বিকেলে দুই বন্ধুর সঙ্গে পাশের গ্রামে টিউশন নিতে গিয়েছিল ছাত্রীটি। কিন্তু সে না-ফেরায় বাড়ির লোকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, দুই বন্ধুর সঙ্গে ঠিক সময়েই সে বাড়ি ফিরছিল। রাস্তায় বন্ধুদের বাড়ি আগে হওয়ায় তারা ঢুকে যায়। কিন্তু ছাত্রীটি আর ফেরেনি। কোথাও তাঁর সন্ধান মেলেনি। শনিবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন বাড়ির লোকেরা।

রবিবার সকালে পার্থ মাইতি নামে এক গ্রামবাসী নিজের পুকুর পাড়ে একটি সালোয়ার-কামিজ এবং ওড়না দেখতে পান। তিনি বিষয়টি জানান পঞ্চায়েত সদস্যকে। ছাত্রীটির বাড়ির লোকদের কাছেও খবর যায়। ফিরে এসে অবশ্য তাঁরা পুকুর পাড়ে সেই পোশাক আর দেখতে পাননি (পরে অবশ্য সেই পোশাক এবং ছাত্রীটির ছবি মেলে বাবুলালের ঘর থেকে)। ওই পুকুরে খোঁজাখুজি করেও ছাত্রীর সন্ধান মেলেনি। পরে পাশের একটি পুকুরে তল্লাশি শুরু হয়। হাঁটু-জলের পুকুরে পাঁকের মধ্যে মেলে ছাত্রীটির মুণ্ড। তারপরেই বাবুলালকে সন্দেহ করে জনতা তার বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়ির লোকেরা জানান, সে বাড়িতে নেই। একটি ঘর তালাবন্ধ ছিল। সেই তালা খুলতে অস্বীকার করেন বাবুলালের বাড়ির লোকেরা। জনতা তখন বাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে তালা খোলা হয়। ঘরের এক কোণে ঘাপটি মেরে বসেছিল বাবুলাল। শুরু হয় গণধোলাই। সেই ফাঁকে পালিয়ে যায় বাড়ির লোকেরা। পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে যায়। পুলিশের জানায়, জেরায় বাবুলাল ভেঙে পড়ে। সে জানায়, ওই কিশোরীর দেহ পোঁতা রয়েছে গ্রামের বাইরে একটি পুকুরের পাড়ে। পুলিশ সেই দেহ তোলে। পুকুর পাড়ের একটি ঝোপ থেকে মেলে চারটি গ্লাস, একটি মদের বোতল এবং এক জোড়া চপ্পল। খুনের ঘটনায় বাবুলের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত।

Crime Rape Falta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy