Advertisement
E-Paper

টেট চাকরিপ্রার্থীদের উপর পুলিশি ‘নির্যাতনের’ বিচার চেয়ে কড়া নিন্দা করে পোস্ট ‘বঙ্গভূষণ’ সৃজিতের

সম্প্রতি চিত্রপরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে পুলিশ আটক করার পরেও সৃজিত মুখ খুলেছিলেন বটে, কিন্তু সে ছিল সতীর্থ পরিচালকের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ২১:৩৩
সৃজিত মনে করেন, চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীরা সুবিচার পাননি।

সৃজিত মনে করেন, চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীরা সুবিচার পাননি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

করুণাময়ীতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের গভীর রাতে পুলিশ যে ভাবে তুলে দিয়েছে, তার প্রতিবাদে এ বার সরব হলেন চিত্রপরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ‘বঙ্গভূষণ’ সম্মান পাওয়া সৃজিত আন্দোলনকারীদের জন্য ‘সুবিচারের’ দাবিও জানিয়েছেন। সম্প্রতি চিত্রপরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে পুলিশ আটক করার পরেও তিনি মুখ খুলেছিলেন বটে, কিন্তু সে ছিল সতীর্থ পরিচালকের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়। তার বাইরে এর আগে এমন বিষয়ে এ ভাবে কখনও সৃজিত সরব হয়েছেন বলে মনে করতে পারছেন না কেউই।

বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে আন্দোলনরত টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের তুলে দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাঁদের জোর করে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র ছেড়ে দেয়। এর পর শুক্রবার সকাল থেকেই টেট চাকরিপ্রার্থীদের উপর পুলিশের ‘বল প্রয়োগের’ সমালোচনায় সরব হয়েছেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা। তাঁর মধ্যে চলচ্চিত্র জগতের মানুষজনও ছিলেন। শুক্রবার বিকেলে সৃজিতও ফেসবুকে নিজের প্রতিবাদের কথা লেখেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমি।’’

ফেসবুকে ওই পোস্টে যে পুলিশের ‘নিন্দা’ করেছেন সৃজিত, সেই পুলিশের দায়িত্ব স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। তিনিই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে সৃজিত যে নেই, তেমনটাও নয়। মাস তিনেক আগে গত জুলাই মাসে সৃজিতকে মমতার সরকারই বঙ্গ ভূষণ দিয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকেই তিনি ওই সম্মান নিয়েছেন।

তবে, এর আগেও এক বার এই সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সৃজিত। গত অক্টোবরের শুরুতে, দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন এই সৃজিতই পরিচালক কমলেশ্বরের পাশে দাঁড়িয়ে সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যের শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের। রাসবিহারীতে সিপিএমের একটি বইয়ের বিপণিতে সপ্তমীর রাতে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে রাজ্যের শাসক দল ‘আশ্রিত’ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গ্রেফতার হন কমলেশ্বর। সৃজিত তখন লিখেছিলেন, ‘‘কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সত্যিই আমি কোনও ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। যাই হোক না কেন, তোমার পাশে আছি কমলদা।’’ সে দিনও পুলিশি পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলেন সৃজিত।

তবে সেটা ছিল পরিচালক কমলেশ্বরের পাশে আর এক পরিচালকের দাঁড়ানোর বিষয়। শুক্রবারের প্রতিবাদে অবশ্য সে রকম কোনও যোগসূত্র নেই। ফেসবুকে শুক্রবার সৃজিত লিখেছেন, ‘‘দুঃখের বিষয় হলেও আমি জানি সামাজিক মাধ্যমের কোনও পোস্ট নিয়ে বিশ্বের কোনও নীতি নির্ধারকেরা মাথা ঘামান না। তা যদি হত তবে আমাদের পৃথিবীটা অন্য রকম হত। তার পরেও এই শব্দগুলো যতই গুরুত্বহীন, ভুলভাল বা অপ্রতুল মনে হোক, আমি লিখছি, আমি আন্দোলনকারীদের উপর এই পুলিশ নির্যাতনের তীব্র নিন্দা করছি। আর আন্দোলকারীদের জন্য সুবিচার চাইছি।’’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাজ্যের বিশিষ্টজনেদের একাংশ এবং সৃজিতের সিনেমাজগতের সহকর্মীদের অনেকেই একটি খোলা চিঠি লিখে অনশনরত টেট আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের ‘বল প্রয়োগের’ নিন্দা করেছেন। বিশিষ্টদের চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সংবাদমাধ্যমে আমরা দেখেছি যে, অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য কী ভাবে বিধাননগর পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তাদের আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনাকে আমরা ধিক্কার জানাই। এবং পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি।’’

রাজ্য সরকারের উদ্দেশে লেখা ওই খোলা চিঠিতে সই করেছেন বিনায়ক সেন, অপর্ণা সেন, চিকিৎসক কুণাল সরকার, নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রেশমী সেন, কৌশিক সেন, ঋদ্ধি সেন প্রমুখ। এ বার সৃজিতও সেই পথেই হাঁটলেন।

TET Scam TET Recruitment TET Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy