Advertisement
E-Paper

বিল তো শিক্ষার স্বার্থেই, আশ্বাস পার্থের

প্রস্তাবিত শিক্ষা বিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে আঘাত হানবে বলে হইচই হচ্ছে। তবে শিক্ষার স্বার্থেই ওই বিল আনা হচ্ছে বলে রবিবার জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির এক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমরা বিলটি আনছি বৃহত্তর ছাত্রসমাজ, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাদরদি-সহ সকলের কথা ভেবেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৬
আলাপচারিতা। সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার। রবিবার শশাঙ্ক মণ্ডলের তোলা ছবি।

আলাপচারিতা। সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার। রবিবার শশাঙ্ক মণ্ডলের তোলা ছবি।

প্রস্তাবিত শিক্ষা বিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে আঘাত হানবে বলে হইচই হচ্ছে। তবে শিক্ষার স্বার্থেই ওই বিল আনা হচ্ছে বলে রবিবার জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির এক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমরা বিলটি আনছি বৃহত্তর ছাত্রসমাজ, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাদরদি-সহ সকলের কথা ভেবেই। আমরা নিশ্চয়ই ভাবব যে, দুষ্টু গরু এতে ব্যথা পেতে পারে। কিন্তু শিষ্ট গরু নিশ্চয়ই রক্ষিত হবে।’’

শিক্ষামন্ত্রীর এই উক্তির পরেই সভাস্থলে ক্ষোভের গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে। তবে শিক্ষকদেরই অন্য অংশের বক্তব্য, মন্ত্রীর এই মন্তব্যকে প্রবাদ-প্রবচনের প্রয়োগ হিসেবেই দেখা ভাল। এর অন্য কোনও রকম অর্থ খুঁজতে যাওয়া ঠিক হবে না।

বিধানসভার চলতি অধিবেশনে যে বিতর্কিত শিক্ষা বিলটি আসতে চলেছে, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সের এ দিনের সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর আগেই সেই প্রসঙ্গ তোলেন বিভিন্ন বক্তা। শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটা-র সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ বলেন, ‘‘এই বিল এলে যৌথ মঞ্চ গড়ে পথে নামা হবে।’’ বিলটির বিরোধিতা করেন সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকারও। বিলে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষকদের হাজিরার হিসেব নেওয়ার বন্দোবস্ত থাকছে। বিশেষ ভাবে ওই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন তিনি।

এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী নিজের বক্তব্যে ওই বিলের প্রসঙ্গ তোলেন। এবং বারবার যে-কথা বলে আসছেন, এ দিন তা বলেন আরও এক বার। তাঁর বক্তব্য, পঠনপাঠনের কোনও বিষয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু অর্থনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা না-হলেও ‘চোখ’ থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে সরকারের নাক গলানোর সমালোচনা হলেই মন্ত্রী বলে থাকেন, সরকার টাকা দেয় বলেই শিক্ষা ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপও করবে। এ দিন সেই সুর বজায় রেখে তিনি জানান, শিক্ষায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারি নজরদারি চলবেই।

বিধানসভার গত অধিবেশনে বিতর্কিত শিক্ষা বিল নিয়ে বিরোধী পক্ষ হইচই করেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ওই বিলে যে-সব বিষয় রাখা হয়েছে, তাতে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে স্বাধিকার বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বিলটি বিধানসভায় পেশ হয়নি। তবে বেশ কিছু সংশোধনের পরে চলতি অধিবেশনে সেই বিল আনা হচ্ছে বলেই ওয়াকিবহাল মহলের খবর।

অর্থনৈতিক অনিয়মের প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন নাম না-করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ‘‘৭২৪ কোটি টাকা পড়ে আছে। অথচ হাত পাতা হচ্ছে সরকারের কাছে! লাভজনক সংস্থার মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। এই টাকায় সুদ আসবে। তা দিয়ে বিদেশ যেতে হবে!! এ-সব ক্ষেত্রে তো কঠোর হতেই হবে।’’ তাঁরা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অডিটের বিষয়েও কঠোর হচ্ছেন বলে জানান মন্ত্রী।

শিক্ষকদের হাজিরার বায়োমেট্রিক খতিয়ান রাখা কেন প্রয়োজন, এ দিন তারও ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, ‘‘কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি সই করে মিছিলে চলে যান, সেটা জানতে পারবেন?’’ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি যে শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করতে বলেছে, এ দিনের সম্মেলনে সেই প্ৰসঙ্গও ওঠে। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়ে দেন, শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬২ করে দেওয়ার পরে ছ’মাসের মধ্যে শূন্য পদ পূরণেই তাঁরা বেশি আগ্রহী।

Partha Chatterjee Eduaction Minister Education System Bill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy