E-Paper

সন্দেশখালি: গণধর্ষণ নিয়ে নির্দেশ ডিজিকে

এ বছরের গোড়ায় সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। এলাকার ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতির তদন্তে এসে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৫
রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সন্দেশখালিতে মুরগির খামার ও পার্টি অফিসে এক মহিলাকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং বিচার শুরু করতে খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, এই মামলায় পলাতক এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার-সহ বাকি তদন্ত যাতে দ্রুত হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া যাতে ঠিক মতো হয়, সে ব্যাপারে ডিজি তত্ত্বাবধান করবেন। নিম্ন আদালতের বিচারককে হাই কোর্টের নির্দেশ, পলাতক অভিযুক্তকে ‘ফেরার’ ঘোষণা করেও দ্রুত পাকড়াও করানো না গেলে তার অনুুপস্থিতিতেই বিচার শেষ করতে হবে।

এ বছরের গোড়ায় সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। এলাকার ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতির তদন্তে এসে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিক ও আধাসেনা জওয়ান। সেই তদন্তে নেমে জানা যায়, এলাকার বিস্তর জমি জোর করে দখলের অভিযোগ রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তাঁর একাধিক শাগরেদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগও সামনে আসে। সেই দলে যেমন ছিল শিবপ্রসাদ হাজরা ও উত্তম সর্দারের নাম, তেমনই রয়েছে আমির আলি গাজির নামও।

মূল ঘটনার তদন্ত সিবিআইকে সঁপে দিলেও আদালতের খবর, এই মামলাটির তদন্তভার রয়েছে পুলিশের হাতেই। অভিযোগ, মামলাকারী মহিলাকে প্রথমে মুরগির খামারে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছিল এবং তার পরে পার্টি অফিসে ডেকে ফের গণধর্ষণ করা হয়। প্রথমে স্থানীয় থানা বিষয়টি মিটমাট করে নিতে বলে। সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হওয়ার পরে ঝাড়খণ্ড থেকে আমিরকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। বর্তমানে আমির জেলবন্দি। এ ক্ষেত্রে আমির আলি জামিনের আর্জি নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় দাবি করেন যে, অভিযোগ অসত্য। তাঁর মক্কেল ২৫৪ দিন জেলবন্দি। চার্জশিট হলেও বিচার শুরু হয়নি।

জামিনের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি ঋতুপর্ণা ঘোষ দে এবং শুচিস্মিতা দত্ত জানান যে তদন্তের সব কাজ হয়েছে, নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ভানু মণ্ডল নামে আরেক অভিযুক্ত ফেরার। বিচারে দেরি করার জন্যই ফেরার থাকার ছক। আমির জামিন পেলে সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট হতে পারে বলেও জানান তাঁরা। নির্যাতিতার আইনজীবী কল্লোল মণ্ডলও জানান যে আমির প্রভাবশালী এবং পুলিশের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা। আমির জেলে
থাকার সময়েও নির্যাতিতাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

জামিনের আর্জি খারিজ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতা যে ভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তাতে ‘অসত্য অভিযোগের’ যুক্তি মেনে নেওয়া যায় না। একইসঙ্গে নির্যাতিতার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে। জেলা আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে যে নির্যাতিতার কাউন্সেলিং এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়টি তাঁদের দ্রুত দেখতে হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Crime

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy