Advertisement
E-Paper

মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে সিটকে আরও তদন্ত করতে বলল হাই কোর্ট, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চায় আদালত

মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর তথ্য আদালতে জানায় কেন্দ্র। গোয়েন্দা সূত্র উল্লেখ করে জানায়, আগামিদিনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা হবে। রাজ্যের প্রায় ১৫টি জেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তির উপর নজর রয়েছে বিক্ষোভকারীদের। সেগুলি নষ্ট করার চেষ্টা হতে পারে।

A photograph of Calcutta High court

মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল বা (সিট)-কে আরও তদন্ত করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৫ ১৯:৪০
Share
Save

মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল বা (সিট)-কে আরও তদন্ত করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই ঘটনায় সিট আরও তদন্ত চালিয়ে যাবে। হাই কোর্টের নিযুক্ত কমিটির পরামর্শ মেনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিটকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। আগামী ৩১ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন তদন্ত সম্পর্কে আদালতকে জানাতে হবে সিটকে। অন্য দিকে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যে ভবিষ্যতে অশান্তির আশঙ্কার কথা জানায় কেন্দ্র।

মুর্শিদাবাদে ঘটনায় তদন্ত করতে ৯ সদস্যের সিট গঠন করে রাজ্য। পাশাপাশি, ওই ঘটনাটির অনুসন্ধান করতে জাতীয় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি গঠন করে হাই কোর্ট। গত বৃহস্পতিবার আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় কমিটি এবং সিট। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, গোপনীয়তা বজায় রাখতে সিট এবং কমিটির রিপোর্ট এখনই প্রকাশ্যে নয়। দু’টি রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে জমা রাখা হবে। হাই কোর্টে কমিটির তরফে একটি পেন ড্রাইভ জমা দেওয়া হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কমিটি রিপোর্টে সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ভিডিয়ো জমা দিয়েছে। তারা শমসেরগঞ্জ থানা এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিল। ওই এলাকার বেতবোনা গ্রামে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রিপোর্টে বলছে, ওই গ্রামের কমপক্ষে ১০০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যা বর্তমানে বসবাসের পক্ষে অযোগ্য। সেই গ্রামের বাড়ির পাশাপাশি পালপাড়া এবং ঘোষপাড়ায় অনেক দোকানঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ২৯টি দোকান ভাঙচুর চালানো হয়।

রিপোর্ট দিয়ে কমিটি জানায়, মুর্শিদাবাদে অশান্তি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সদর্থক ভূমিকা না থাকার প্রয়োজনীয় কারণ রয়েছে। অনেক ক্ষতিগ্রস্তের বক্তব্য, পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি। সময় মতো পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি সেখানে একটি স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরির দাবি জানিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পের দাবির বিষয়টি আগামিদিনে বিবেচনা করবে আদালত। অন্য দিকে, গত ২৭ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্থদের যে তালিকা কমিটি তৈরি করেছে। সেই তথ্য মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানার প্রয়োজন নেই। ওই সব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের আস্থা ফেরাতে পুরানো জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে। সব ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্রয় এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা রাজ্যকে করতে হবে। প্রশাসনের দায়িত্ব, তাঁদের শান্তি, সম্প্রতি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, অনেক ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের দেওয়া ক্ষতিপূরণ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। আমরা নিশ্চিত যে এই বিষয়টির উপর রাজ্য নজর দেবে। কমিটিতে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, তাদেরকে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি করবে। পরবর্তী শুনানির দিন ওই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেবে।

মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর তথ্য আদালতে জানায় কেন্দ্র। হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী জানান, হিন্দুদের ৫০০ জনকে শমসেরগঞ্জ থানা থেকে মালদহ জেলায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব আলোচনা করে অতিরিক্ত আরও ৩০০ বিএসএফ জওয়ানকে মুর্শিদাবাদে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া রাজ্যের অনুরোধ মেনে আগেই ৫ কোম্পানি অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এএসজি আরও জানান, রাজ্যকে বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদ-সহ অন্য জেলায় নজর রাখতে। সব জায়গায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। গোয়েন্দা মারফত জানা গিয়েছে, আগামিদিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা হবে। রাজ্যের প্রায় ১৫টি জেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তির উপর নজর রয়েছে বিক্ষোভকারীদের। সেগুলি ক্ষতিগ্রস্থ করার চেষ্টা হতে পারে। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, গত ১৮ এপ্রিল এই সব তথ্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানানো হয়েছে। রাজ্যকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা অবনতি, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে। এমনকি রাজ্য চাইলে প্রয়োজনে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল, অশান্তি উপদ্রুত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। গত ১১ এপ্রিল থেকে ১০৯৩টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাজ্য একটি পুনর্বাসন প্রকল্প তৈরি করেছে। ২৮৩টি পরিবারকে সাহায্য করতে ৩ কোটি ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১.২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই টাকা ক্ষতিগ্রস্থদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ ছাড়া ৪০ জন ক্ষতিগ্রস্থকে ৪০টি সেলাই মেশিন কেনার টাকা দেওয়া হয়েছে।

Murshidabad Murshidabad Unrest Murshidabad protest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।