Advertisement
E-Paper

মাত্র ঊনত্রিশে খাবি খাচ্ছে ঈশ্বরগুপ্ত সেতু

মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের কারণ কী? চলছে কাটাছেঁড়া। উদ্বেগ ছড়িয়েছে অনেক সেতু নিয়েই। উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিযোগ। এ রাজ্যে গঙ্গার উপরে সেতুগুলির বেশির ভাগই বেশ পুরনো। সেগুলির হাল কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ, ঈশ্বরগুপ্ত সেতু।মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের কারণ কী? চলছে কাটাছেঁড়া। উদ্বেগ ছড়িয়েছে অনেক সেতু নিয়েই। উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিযোগ। এ রাজ্যে গঙ্গার উপরে সেতুগুলির বেশির ভাগই বেশ পুরনো। সেগুলির হাল কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ, ঈশ্বরগুপ্ত সেতু।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৬
বেহাল: এই সেতু নিয়েও বাড়ছে চিন্তা। ছবি: প্রণব দেবনাথ

বেহাল: এই সেতু নিয়েও বাড়ছে চিন্তা। ছবি: প্রণব দেবনাথ

দেড় বছরের কিছু আগে ধরা পড়েছিল ‘অসুখ’। ‘ডাক্তার’রা নিদান দিয়েছিলেন ‘চিকিৎসা’র। কিন্তু লাভ হল না।

মাত্র ২৯ বছর বয়সেই খাবি খাচ্ছে ঈশ্বরগুপ্ত সেতু বা কল্যাণী ব্রিজ। ফাটল-সহ নানা ‘উপসর্গ’ দিন দিন বেড়েই চলেছে। নদিয়ার কল্যাণীর সঙ্গে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার সংযোগকারী এই সেতুর স্বাস্থ্যোদ্ধার যে আর সম্ভব নয়, তা রাজ্য সরকার কয়েক মাস আগেই ঘোষণা করে দিয়েছে। সরকার জানিয়েছে, ওই সেতুর পাশে একটি ছয় লেনের আধুনিক সেতু তৈরি করা হবে। এ বছরের শেষে সে কাজ শুরু হবে।

কিন্তু সেতুর স্বাস্থ্যহানি হল কেন? গাড়ি-চালকদের অনেকেরই দাবি, এর পিছনে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশও তাতেই সিলমোহর দিচ্ছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, তৈরির সময়ে ত্রুটি থাকতে পারে। আবার কারও ধারণা, গঙ্গা থেকে দেদার বালি তোলার জন্যই এমন হাল।

পূর্ত (সড়ক) দফতরের হুগলি হাইওয়ে ডিভিশন-২ এর এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত কুণ্ডু অবশ্য রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কথা মানছেন না। তিনি বলেন, ‘‘সেতুর বেয়ারিং এবং স্তম্ভে‌ ত্রুটি ধরা পড়েছিল। পাইলট প্রকল্প হিসেবে আমরা প্রাথমিক পর্বে কিছুটা মেরামত করেছিলাম। তা সফল হয়েছে। শীঘ্রই পরবর্তী পর্যায়ের কাজ শুরু হবে।’’

দিল্লি রোড বা জিটি রোড হয়ে কল্যাণী এবং ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলির কাঁচামাল এবং পণ্য যাতে সহজে আনা-নেওয়া যায় সেই লক্ষ্যেই ১৯৮৯ সালে সেতুটি তৈরি হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের এক ভোরে ‘রোগ’টা ধরা পড়ে আচমকাই। এক ভ্যানচালক দেখেন, সেতুর কল্যাণী প্রান্তের একটি অংশে বড় ফাটল। তিনি কল্যাণী টোলপ্লাজায় খবর দেন। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফাটল বেড়ে সেতুর একটি দিক ছ’ইঞ্চি বসে যায়। দিন পনেরো পরে ইস্পাতের পাটাতন পেতে তার উপর দিয়ে ছোট যানবাহন চালানো শুরু হয়।

পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, সেতুর গার্ডারের নীচের বিয়ারিং সরে যাওয়াতেই ওই বিপত্তি। উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ক্ষেত্রেও এমনই ঘটেছিল। ফাটল আগে চোখে না-পড়লে এ ক্ষেত্রেও তেমন ঘটনা ঘটতে পারত বলে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছিলেন। পরে পরীক্ষায় দেখা যায়, সেতুর গার্ডারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি মেরামত করে ফের সেতু ফের খুলে দেওয়া হয় সাত মাস পরে। কিন্তু মাস চারেক পরে ফের ফাটল ধরা পড়ে সেতুর গার্ডার এবং উপরের অংশে। তার পর থেকে সেতুতে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তা সত্ত্বেও সেই নিষেধাজ্ঞাকে এড়িয়ে অনেক সময়েই অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক ওই সেতু ব্যবহার করছে, এই অভিযোগও উঠছে।

মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে ওই সেতু নিয়েও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বহু ছোট গাড়ি প্রতিদিন ওই সেতু ব্যবহার করে। কল্যাণীর বাসিন্দা রুমকি রায় বলেন, ‘‘মেয়ের স্কুলের গাড়ি রোজ ওই সেতু দিয়েই যাতায়াত করে। খুব ভয় লাগে। চারদিকে যে ভাবে হঠাৎ করে সেতু ভেঙে পড়ছে!’’

তথ্য সহায়তা: গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও মনিরুল শেখ

Bridge Condition Poor Ganges
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy