Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Education Department

নিয়মে সংশোধন, প্রধান শিক্ষকদের অতিরিক্ত বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল শিক্ষা দফতর

স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করে যারা সরকার থেকে অতিরিক্ত বেতন নিয়েছেন তা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

Image of Bikash Bhawan.

স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে চাকরিরতদের নেওয়া অতিরিক্ত বেতন ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ১৩:১৭
Share: Save:

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নেওয়া অতিরিক্ত বেতন ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল শিক্ষা দফতর। সোমবার শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলার শিক্ষা আধিকারিকদেরও।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির পরে যে সব স্কুল মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছিল, সেই সব স্কুলের যাঁরা প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকা রয়েছেন, এবং ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির পরে মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক যাঁরা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েছেন, তাঁদের অতিরিক্ত টাকা ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট স্কুলকে একটি গুগল শিট পূরণ করতে হবে। সেই শিট ডিআইদের মারফত জমা পড়বে শিক্ষা দফতরে। তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নিয়ম ছিল, ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির পর যদি কোনও স্কুল মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত ২০০ টাকা গ্রেড পে পাবেন। শিক্ষা দফতরের এক যুগ্ম সচিবের একটি নির্দেশকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যুগ্ম সচিবের নির্দেশে বলা হয়েছিল, যে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা, ২০০ টাকা গ্রেড পের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ বর্ধিত বেতন পাবেন। কিন্তু ওই নির্দেশ অর্থ দফতরের অনুমোদন ক্রমে হয়নি বলেই শিক্ষা দফতর থেকে জানা গিয়েছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম সচিবের সেই নির্দেশ মেনেই অতিরিক্ত বেতন নিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা।

কিন্তু রোপা ২০০৯-এর মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষকের জন্য কোনও অতিরিক্ত বেতন বৃদ্ধির কথা বলা ছিল না। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, যে সব প্রধান শিক্ষক এই অতিরিক্ত বেতন নিয়েছিলেন, তাঁদের অবসরের পর পেনশন পেতে জটিলতা হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত বেতনের টাকা ফেরত দিয়ে পেনশনের জটিলতা কাটাতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা দফতরের কমিশনার একটি ফরম্যাটের মাধ্যমে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (মাধ্যমিক-ডিআই) নির্দেশ দিয়েছেন যে, এই ধরনের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা যাঁরা আছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে হবে। সঙ্গে তাঁরা অতিরিক্ত বেতনের টাকা ফিরিয়েছেন কিনা, তাও জানাতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, “এ ক্ষেত্রে শিক্ষা দপ্তর কোনও প্রধান শিক্ষককে সরাসরি অর্থ ফেরানোর কথা বলেনি। বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রধান শিক্ষক পদে যারা চাকরি করেছেন তারা অতিরিক্ত বেতন নিয়েছেন কিনা তা জানাতে। কারণ অনেক প্রধান শিক্ষক ইতিমধ্যে অবসর নিয়েছেন, আবার কিছু প্রধান শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। কোন শিক্ষক অতিরিক্ত বেতন নিয়েছেন কোন শিক্ষক নেননি। এর সঠিক পরিসংখ্যান পেতেই বিজ্ঞপ্তি মারফত তাদের প্রকৃত সংখ্যা জানার চেষ্টা হচ্ছে মাত্র। তারপরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই পদ্ধতিতে আসলে শিক্ষা দফতরের কাজে স্বচ্ছতা আসবে। বাম জমানায় যে অস্বচ্ছতা তৈরি হয়েছিল শিক্ষা প্রশাসনে সেই অস্বচ্ছতা অনেকটাই দূর করা সম্ভব হবে।”

এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময় মনে করি, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের যাঁরা প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা তাঁদের অতিরিক্ত দায়িত্বভার বহন করতে হয়। সেই জন্য প্রয়োজনে শিক্ষা দফতর অর্থ দফতরের অনুমোদন নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য অতিরিক্ত বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Department West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE