Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আবেদনের পরেও তথ্য মিলছে না: এপিডিআর

দীর্ঘদিন আগেই তথ্য জানার অধিকার আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। তথ্য জোগানোর জন্য গড়া হয়েছে তথ্য কমিশন। কিন্তু সেখানে বিধিমাফিক আবেদন করেও অনেক তথ্যই যে পাওয়া যাচ্ছে না, সাধারণ মানুষের সেই অভিযোগে গলা মেলাল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-ও।

অসহায়: কলেজ স্ট্রিটে ম্যানহোল সাফাই করছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: কলেজ স্ট্রিটে ম্যানহোল সাফাই করছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
Share: Save:

দীর্ঘদিন আগেই তথ্য জানার অধিকার আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। তথ্য জোগানোর জন্য গড়া হয়েছে তথ্য কমিশন। কিন্তু সেখানে বিধিমাফিক আবেদন করেও অনেক তথ্যই যে পাওয়া যাচ্ছে না, সাধারণ মানুষের সেই অভিযোগে গলা মেলাল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-ও।

ওই সংগঠনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজাত ভদ্রের অভিযোগ, আলিপুর ও প্রেসিডেন্সি জেল সরানো, কিষেণজির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত, রাজ্যে মাওবাদী বন্দির সংখ্যা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেও উত্তর মিলছে না। সুজাতবাবু বলেন, এপিডিআরের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ওই দু’টি সংশোধনাগার কি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? সে-ক্ষেত্রে দু’টি সংশোধনাগার কি ভেঙে ফেলা হবে? হেরিটেজ ভবনের তকমার কী হবে? ওই জমিই বা লাগবে কোন কাজে? উত্তর মেলেনি। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

মাওবাদী নেতা কিষেণজির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, তারও তথ্য পাননি সুজাতবাবু। রাজ্যের কোন জেলে ক’জন মাওবাদী কত দিন বন্দি আছেন, তাঁদের ক’জনের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিয়েছে ইত্যাদি জানাতে আবেদন করেন সুজাতবাবু। তারও কোনও উত্তর পাননি। বাধ্য হয়ে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে যেতে হয়। রাজ্যের তথ্য কমিশনের হাল কী, তিনটি উদাহরণ দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সুজাতবাবু। এপিডিআর মানবাধিকার নিয়ে সব সময়েই সরব। তারাও তথ্য জানতে পারছে না। তা হলে সাধারণ মানুষ কী করে তথ্য পাবেন, প্রশ্ন তুলে সুজাতবাবু বলেন, ‘‘তথ্য জানার অধিকার আইনটিকে আরও কার্যকর করতে হবে। কমিশনারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। দিতে হবে তথ্য।’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে তিন জন তথ্য কমিশনার আছেন। গোয়া এবং উত্তরাখণ্ডেও আছেন তিন জন। মণিপুর, মেঘালয়, কেরল, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও সিকিমে তথ্য কমিশনার রয়েছেন এক জন। হিমাচল, ঝাড়খণ্ডে দু’জন। অরুণাচলে চার, মধ্যপ্রদেশে ছয়, তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্রে সাত, উত্তরপ্রদেশে তথ্য কমিশনার ন’জন। সংখ্যাটা সব চেয়ে বেশি হরিয়ানায়— ১১।

২০০৫ সালে বাম আমলে পশ্চিমবঙ্গ তথ্য কমিশনে তথ্য কমিশনার বাড়ন্ত ছিল। এখনও একই অবস্থা। দু’জন কমিশনার দিয়ে কাজ চলছে। এক জন মুখ্য তথ্য কমিশনার আর এক জন তথ্য কমিশনার। ‘‘তথ্য জানানোর বিষয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে পশ্চিমবঙ্গে। অন্য রাজ্যে গেলে লজ্জা হয়। এখানে আবেদন করে তথ্য পাওয়া যায় না। হয়রানির একশেষ। এখানে মাত্র দু’জন কমিশনার। এক জন ছুটিতে গেলে কাজ বন্ধ,’’ বললেন তথ্য জানার অধিকার নিয়ে আন্দোলনরত অমিতাভ চৌধুরী।

রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জমে থাকা আবেদনগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ভিডিয়ো সম্মেলন করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Infromation Application APDR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE