Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাতুড়ির ঘায়ে ভাঙা হল জরুরি বিভাগের তালা 

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘আমরা সব সময় জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে রয়েছি। আন্দোলনেও সমর্থন রয়েছে, বোঝাতে আমরা গিয়েছিলাম।

ভাঙা হচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের তালা। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙা হচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের তালা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৯ ০২:৫০
Share: Save:

হাসপাতালের শয্যা, বেঞ্চ দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আটকানো ছিল দরজা। ঝুলছিল তালা। বহু অনুরোধেও তা খোলা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতুড়ি মেরে ভাঙা হল বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সেই তালা। তবে বহির্বিভাগ বন্ধই রইল। সন্ধ্যায় হাসপাতালের কর্তারা গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দেন। তবে সেই সঙ্গেই বহির্বিভাগ চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ অবস্থান তুলে নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। যদিও তাঁদের ঘোষণা, কর্মবিরতি চলবে। আজ, শুক্রবার সকাল থেকে ফের তাঁরা আন্দোলন শুরু করবেন।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘আমরা সব সময় জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে রয়েছি। আন্দোলনেও সমর্থন রয়েছে, বোঝাতে আমরা গিয়েছিলাম। তবে চিকিৎসা পরিষেবায় যাতে ঘাটতি যাতে না হয়, সে বার্তা দিয়েছি।’’

বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমানের একটা বড় অংশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিক্যালের উপরে নির্ভরশীল। পুলিশের দাবি, অন্য দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ‘ইন্ডোর’ মিলে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ আসেন। সেখানে এ দিন হাতেগোনা কয়েক জন ছাড়া হাসপাতাল চত্বর খাঁ-খাঁ করছিল। তবে যাঁরা ভর্তি ছিলেন, ‘ঠিকঠাক’ পরিষেবা পাননি বলে অভিযোগ তাঁদের পরিবারের।

কাটোয়ার চাণ্ডুলি গ্রামের মধুমিতা পাল প্রসব-যন্ত্রণা নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ ভর্তি হন বর্ধমান মেডিক্যালে। তাঁর স্বামী সুব্রত পালের অভিযোগ, ভর্তির পর থেকে মধুমিতাকে কোনও চিকিৎসক দেখেননি। বুধবার রাতে মাতৃগর্ভে মারা যায় শিশু। বৃহস্পতিবার সকালে অস্ত্রোপচার করে বার হয় তাকে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালের যা পরিস্থিতি কোথায় অভিযোগ করব, কার কাছেই বা অভিযোগ করব! ডাক্তারেরা রোগীদের পাশে দাঁড়ালে আমার মতো অনেককে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হত না!’’

জরুরি বিভাগের মূল দরজা ও হাসপাতালের দু’টি গেট খোলার জন্য এ দিন সকাল থেকেই বারবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনকারীরা তাতে সাড়া দেননি। দফায় দফায় জরুরি বিভাগ এবং হাসপাতালের আরও দু’টি গেট ‘পাহারা’ দিতে থাকেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। দুপুরে বিশাল পুলিশ বাহিনী জরুরি বিভাগের সামনে পৌঁছয়। সওয়া ৩টে নাগাদ জরুরি বিভাগের মূল গেটের সামনে যান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল, সুপার উৎপল দাঁ। হাতুড়ি দিয়ে তিনটি দরজারই তালা ভাঙেন হাসপাতালের কর্মীরা।

বিকেলে দুই শিক্ষক-চিকিৎসকের সঙ্গে হাসপাতাল সুপার আন্দোলনকারীদের কাছে গিয়ে বহির্বিভাগ চালু করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। যদিও আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, ‘‘বারবার আক্রান্ত হয়েছি। একই কায়দায় বারবার বহির্বিভাগ খোলানো হয়েছে। গোটা দেশের ডাক্তারেরা আন্দোলনের পাশে। এখন বহির্বিভাগ খোলা মানে আন্দোলন স্তব্ধ করে দেওয়া।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE