Advertisement
১৯ মে ২০২৪

রাম-সীতা ঘুরে বেড়াচ্ছে, হনুমান হাজতে: আসিফ

এই সে দিনও নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ের একান্ত অনুগত বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খান। সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পরে বলেছিলেন, ওই দুই নেতা-নেত্রীর আদেশ পালন ছাড়া নিজে থেকে কোনও কাজই তিনি করেননি। দল ছেড়ে নেতৃত্বেরবিরুদ্ধে তোপ দাগার পরে প্রতারণার মামলায় রাজ্য পুলিশের হাতেগ্রেফতার হয়েছেন সেই আসিফ। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে ঢোকার সময় তাঁর তির্যক মন্তব্য, “রাম-সীতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর হনুমান হাজতে!”

বারাসত আদালতে আসিফ খান। বৃহস্পতিবার সুদীপ ঘোষের ছবি।

বারাসত আদালতে আসিফ খান। বৃহস্পতিবার সুদীপ ঘোষের ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৩
Share: Save:

এই সে দিনও নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ের একান্ত অনুগত বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খান। সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পরে বলেছিলেন, ওই দুই নেতা-নেত্রীর আদেশ পালন ছাড়া নিজে থেকে কোনও কাজই তিনি করেননি। দল ছেড়ে নেতৃত্বেরবিরুদ্ধে তোপ দাগার পরে প্রতারণার মামলায় রাজ্য পুলিশের হাতেগ্রেফতার হয়েছেন সেই আসিফ। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে ঢোকার সময় তাঁর তির্যক মন্তব্য, “রাম-সীতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর হনুমান হাজতে!”

রাম-সীতা বলতে তিনি কাদের বুঝিয়েছেন, তা খোলসা করে বলে উঠতে পারেননি আসিফ। কিন্তু তাঁরা যে রাঘব বোয়াল, তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্যই অনুগত হনুমান হওয়া সত্ত্বেও আজ তাঁকে হাজতবাসকরতে হচ্ছে, সে অভিযোগ আজ আরও এক বার করেছেন তৃণমূলের এই প্রাক্তন নেতা, উত্তরপ্রদেশে দলের সাবেক পর্যবেক্ষক। পুলিশের গাড়ি থেকে এজলাসে নিয়ে যাওয়ার সময়ে এ দিন সাংবাদিকদের উদ্দেশে আসিফ বলেন, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। অনেক রাঘব বোয়ালের সম্পর্কে সিবিআইকে নানা তথ্য দিয়ে দিয়েছি। সেই কারণেই আমার ওপর এত রাগ।”

পুলিশ সে সময়ে তাঁকে কথা বলতে বাধা দেয়। তার মধ্যেও আসিফ কোন রকমে আরও বলেন, “আরও অনেক তথ্য আছে। সময়ে সব জানিয়ে দেব। রাজ্য সরকার আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। হাজতে পুরে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।”

সারদা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই আদালত, সিবিআই দফতর, ইডি দফতর সহ অন্যান্য জায়গায় ঢোকা-বেরনোর সময় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে থাকেন সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে জেলে যাওয়া তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষের। পুজোর আগে পঞ্চমীর দিন কুণাল আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “ওঁরা পুজো উদ্বোধন করবেন। আর আমি জেলে বসে ঢাকের আওয়াজ শুনব! এ হতে পারে না।” এর আগে কোনও রাখঢাক না-করেই কুণাল আদালতে বলেছিলেন, “সারদা মিডিয়ার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধা যদি সব থেকে বেশি কেউ পেয়ে থাকেন তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” এ বার কুণালের পথে হাঁটলেন আসিফ খানও।

এ দিন বারাসতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট মধুমিতা রায়ের এজলাসে তোলা হয় আসিফ খানকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী লোকেশ শর্মা। তিনি আদালতকে বলেন, সিবিআইকে তথ্য দেওয়ার জন্যই তাঁর মক্কেলকে হেনস্থা করা হচ্ছে। বানানো অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আইনজীবীর বক্তব্য, অভিযোগকারী রাজারাম শরাফের আয়কর সংক্রান্ত ফাইল দেখা হোক। তা হলেই ৮ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। যাঁরা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন বলে দাবি, তাঁদেরও মিথ্যা বলানো হচ্ছে বলে এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন লোকেশবাবু। সরকারি কৌঁসুলি শান্তময় বসু আদালতে বলেন, উত্তরপ্রদেশ ও ওড়িশার বাসিন্দা দু’জনের কাছে ৮ কোটি টাকা রেখে এসেছেন আসিফ খান। ওই টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযুক্তকে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে নেওয়া দরকার। বিচারক এই আবেদন মঞ্জুর করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE