E-Paper

সবার জন্য খুলবে মাইকেলের শেষ জীবনের ঘর

একেবারে গঙ্গার ধারে জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দু’টি ঘরে মাইকেল ও তাঁর স্ত্রী হেনরিয়েটা জীবনের শেষ তিনটি মাস থেকেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩৫
Michael Madhusudan Dutt

মাইকেল মধুসূদন দত্ত। —ফাইল চিত্র।

গোটা রাজ্যে যা ঘটছে তার নিরিখে বলাই যায় এ যেন উলটপুরাণ। কলকাতার নানা এলাকায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিজড়িত বাড়িগুলির যখন কার্যত ‘বেদখল’ দশা, উত্তরপাড়ায় কবির শেষ জীবনের সাক্ষী কয়েকটি ঘর হয়তো মধুস্মৃতি রক্ষাতেই উৎসর্গ হতে পারে।

একেবারে গঙ্গার ধারে জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির দু’টি ঘরে মাইকেল ও তাঁর স্ত্রী হেনরিয়েটা জীবনের শেষ তিনটি মাস থেকেছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় ওই বাড়ি থেকেই নৌযাত্রায় তিনি কলকাতায় পৌঁছে ১৮৭৩ সালে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। হেনরিয়েটা এবং মাইকেল— দু’জনেই এর পরে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে কলকাতায় মারা যান। মাইকেলের বন্ধু রাসবিহারী মুখোপাধ্যায়ের (জয়কৃষ্ণের নাতি) সৌজন্যে কিছু কাল উত্তরপাড়ার বাড়িতে সস্ত্রীক থাকা হয়েছিল কবির।

উত্তরপাড়ার বাড়িটি বহু দিনই ‘জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরি’। রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল, প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং বিধানচন্দ্র রায় থেকে জ্যোতি বসু পর্যম্ত রাজ্যের চার জন মুখ্যমন্ত্রী সেই গ্রন্থাগারে এসেছেন। মধুসূদনের ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী, বাসনপত্র, গ্রামোফোন, পোশাকও ওই গ্রন্থাগারের ঘরে পড়ে আছে বলে স্থানীয় আধিকারিকদের দাবি। দেশে রাম আবেগের পটভূমিতে, রাবণ-মেঘনাদের বীরত্বে মুগ্ধ মাইকেলের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে উত্তরপাড়ার গ্রন্থাগারের কাছে স্থানীয় নেতাজি ভবনে উত্তরপাড়া-কোতরং পৌরসভার উদ্যোগে মাইকেলের প্রদর্শনীর সূচনা হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় বালক রামের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার দিনেই। জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরি থেকে কিছু সামগ্রী এনে নেতাজি ভবনের ঝকঝকে অলিন্দে সাজানো হয়েছিল। বাংলা সাহিত্যের তিন শিক্ষক রুদ্রশেখর সাহা, মিথুননারায়ণ বসু এবং শুভময় সরকারের চেষ্টায় প্রদর্শনীটি গোছানো হয়। বৃহস্পতিবার মধুকবির ২০০ বছরের জন্মদিনে পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘মাইকেলের বিষয়ে প্রদর্শনীটি স্থায়ী ভাবে জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরিতে সরিয়ে এনে সাধারণের জন্য খুলে দেব। নাগরিক পরিষেবা ছাড়া স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি মেলে ধরাও তো পুরসভার কাজ।’’

কলকাতায় খিদিরপুরে মাইকেলের পৈতৃক বাড়ি পুরসভার ঐতিহ্য-তালিকায় থাকলেও স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর দোকান, কারখানায় ভরপুর। ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য লিখেছিলেন লালবাজারের কাছে ৬ নম্বর চিৎপুর রোডে, তার অবস্থানও এখন বিতর্কিত। নোনাপুকুরের দিকে মাইকেল-হেনরিয়েটার বসবাসের ভাড়াবাড়িরও ঠিক-ঠিকানা নেই।
সবেধন নীলমণি উত্তরপাড়ার ঘর দু’টিই এখনও মাইকেলের স্মৃতি ছুঁয়ে। স্মৃতিরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের চেষ্টাটুকুও ব্যতিক্রমী।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Michael Madhusudan Dutt Kolkata Bengali Poet

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy