E-Paper

১০০ দিনের তদারকিতে সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার

প্রশাসনের অন্দরের খবর, আপাতত পাঁচটি সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের পদ তৈরির জন্য অর্থ দফতরের অনুমোদন চেয়েছিল পঞ্চায়েত দফতর। ইতিমধ্যেই সেই পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ-কর্তারা।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১৩
nabanna

নবান্ন। —ফাইল চিত্র।

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ এখনও বন্ধ। তবে এই অবস্থাতেই বিশেষ করে ওই কাজের সহযোগিতায় একাধিক সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের পদ সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার।

ঘটনাচক্রে, দাবি আদায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করতে যাওয়ার আগেই এই কাজ সেরে ফেলেছে অর্থ এবং পঞ্চায়েত দফতর। প্রবীণ আমলাদের অনেকের দাবি, ওই বৈঠকের পরে প্রকল্পে বরাদ্দ ছাড়ার একটা ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে। ফলে এই পদক্ষেপ যাবে রাজ্যের অনুকূলে। তাই সম্ভবত এই প্রস্তুতি।

প্রশাসনের অন্দরের খবর, আপাতত পাঁচটি সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের পদ তৈরির জন্য অর্থ দফতরের অনুমোদন চেয়েছিল পঞ্চায়েত দফতর। ইতিমধ্যেই সেই পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ-কর্তারা। ফলে ওই পদে বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগে বাধা থাকার কথা নয়। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক সূত্রে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে ওই প্রকল্পে বড় ধরনের কাজগুলির দেখভাল শুরু থেকেই করবেন সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও দায়িত্ব পড়তে পারে তাঁদের কাঁধে।

এক জেলা-কর্তার বক্তব্য, “বহু ধরনের কাজ হয় প্রকল্পের আওতায় যেগুলিতে ডিপিআর বা প্রকল্পের সবিস্তার রিপোর্ট এবং টেন্ডার প্রয়োজন। যা শোনা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির এই সব কিছুর দেখভাল তাঁরা করবেন।”

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, “এখন অনেক ভাবে এবং প্রযুক্তির সহযোগিতায় কাজ হয়। ফলে সেগুলি নিরীক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ নজরের প্রয়োজন। সেই কারণে এমন পদ তৈরি করা হয়েছে। শুধু ডিপিআর-টেন্ডার কেন, বাকি সব বিষয়েও তাঁদের ভূমিকা থাকবে।” বরাদ্দের প্রশ্নে তাঁর সংযোজন, “না আঁচালে বিশ্বাস নেই। তবে আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। প্রয়োজনীয় সব কাজ সেরে রাখা হয়েছে।”

প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সংশ্লিষ্ট সব প্রকল্পগুলির মধ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আগেই আটকেছিল কেন্দ্রীয় বরাদ্দ। এই পরিস্থিতির প্রায় বছর ঘুরে গেলেও, বরাদ্দ আসেনি। এখনও পর্যন্ত প্রকল্পে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বকেয়ার দাবি করছে রাজ্য। জট কাটাতে কেন্দ্রের কাছে একাধিক বার দাবি বা দরবার করা হলেও, পরিস্থিতির বদল হয়নি। বরং দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছে বহু কেন্দ্রীয় দল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানাচ্ছে, বিরোধীদের তোলা অভিযোগ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, ওই প্রকল্পে যে কাজের দাবি প্রশাসনিক ভাবে করা হয়েছিল, তার বাস্তব প্রয়োগ এবং গুণমানও খতিয়ে দেখেন পর্যবেক্ষক দলের সদস্যেরা। তাতে গুণমান, প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং অস্তিত্ব নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। গত বছর কাজের খামতির নিরিখে কয়েকটি জেলাকে বিপুল অঙ্কের জরিমানাও করে কেন্দ্র। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সেই দিক থেকে রাজ্যের পদ সৃষ্টির এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই সব কাজের ব্যাপারে এবং খামতি নিয়ে একাধিক সুপারিশ অনেক দিন থেকেই করে আসছে কেন্দ্র। রাজ্য পর্যায়ক্রমে সেগুলি কার্যকর করার পথে হেঁটেছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল জবকার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্ত করা। ভুয়ো বা অন্যায্য জবকার্ড বাতিলও করা হয়েছে বহু। প্রকল্পে নজরদারির জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ দিয়ে তার প্রমাণ ইত্যাদি সবই দফায় দফায় চালু করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, প্রকল্পের বরাদ্দ দীর্ঘদিন ধরেই আটকে রয়েছে। এত পরে এই পদক্ষেপ কেন!

রাজ্যের দাবি, সময়ের সঙ্গে কেন্দ্রের সুপারিশ মেনে অডিট, জিও-ট্যাগিং, নজরদারি, মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার, দল গড়ে কাজের নজরদারি—সব চালু করা হয়েছে। আধার যোগের কাজও ৯৯%-এর বেশি হয়ে গিয়েছে। ফলে এটাও একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পঞ্চায়েতমন্ত্রীর দাবি, “সময় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা সব সময় পদ্ধতি পরিমার্জন করে থাকি। এটাও তার অঙ্গ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal government Mamata Banerjee 100 days work

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy