Advertisement
১০ নভেম্বর ২০২৪
State Government

আর লিজ় নয়, জমির মালিকানাই পেল জিন্দল গোষ্ঠী

দেড় দশক আগে, বাম আমলে প্রায় ৪৩০০ একরের এই জমিতে জিন্দলদের ইস্পাত কারখানা হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে ৩৮০০ একর জমি জিন্দলদের লিজ়ে দেওয়া হয়েছিল।

nabanna

নবান্ন। —ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
শালবনি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৮
Share: Save:

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্পাত কারখানা গড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখানোর পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়, তা হলে কি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে, জিন্দলদের লিজ়ে দেওয়া জমির ‘অব্যবৃহত’ অংশেই কি হবে সেই কারখানা? কিন্তু তা যে হচ্ছে না, সেটা সরকারের তরফে একটি সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট হয়ে গেল। শালবনির সেই জমির লিজ় অংশটি সম্প্রতি ফ্রি-হোল্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। জিন্দল গোষ্ঠীকেই জমির মালিকানা দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।

দেড় দশক আগে, বাম আমলে প্রায় ৪৩০০ একরের এই জমিতে জিন্দলদের ইস্পাত কারখানা হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে ৩৮০০ একর জমি জিন্দলদের লিজ়ে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করেন। তার পর থেকেই অবশ্য এলাকায় মাওবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। জিন্দলরা ইস্পাত কারখানা তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করে সেখানে কিছু অংশে সিমেন্ট কারখানা গড়ে। বাকি প্রায় ৮০ শতাংশ জমি পড়েই ছিল। সম্প্রতি এই জমির মাপজোকও হয়। এ বারে সেই লিজ় জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়েছে জিন্দলদের।

অথচ কয়েক মাস আগে শালবনিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জিন্দল গোষ্ঠী অব্যবহৃত জমি ফেরত দেবে। তার পরে স্পেনে গিয়ে সৌরভের ঘোষণা। যদিও সম্প্রতি সৌরভদের সেই কারখানা শালবনির পরিবর্তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলারই গোয়ালতোড়ে প্রয়াগ ফিল্মসিটির জমিতে তৈরি হতে পারে বলে শোনা গিয়েছে। এর মধ্যেই শালবনির জমির মালিকানা দেওয়া হল জিন্দলদের।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি মানছেন, ‘‘ওই জমি ফ্রি-হোল্ড হয়েছে। এর আগে লিজ়ে ছিল।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, এ নিয়ে ইতিমধ্যে সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। জানা গিয়েছে, লিজ়ে থাকা সরকারি জমি ইচ্ছুকদের মালিকানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। শিল্প-সহ নানা ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। সেই সূত্রেই শালবনির ওই জমির মালিকানা পেল জিন্দল গোষ্ঠী।

এখন প্রশ্ন, তা হলে কি শালবনিতে সৌরভদের ইস্পাত কারখানার তৈরির পথ একেবারে বন্ধ হয়ে গেল? সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, এখন জিন্দলরা যেমন চাইবেন, ওই জমি সে ভাবেই ব্যবহার করা হবে। জমিতে আরও নতুন শিল্পও হতে পারে। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসকের মন্তব্য, ‘‘সরকারি এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনে শালবনির ভাল হবে।’’ আর সৌরভের ঘোষিত ইস্পাত কারখানা কোথায় হবে? এ বার জেলাশাসকের জবাব, ‘‘সরকারি ভাবে কিছু জানা গেলেই এ নিয়ে বলতে পারব। তার আগে নয়।’’

শিল্প নিয়ে পরের পর ঘোষণা শুনে আসছে শালবনি। এখানকার জমিদাতাদের দাবি— কারখানা আর কাজ। জমিদাতা সংগঠনের নেতা পরিষ্কার মাহাতো বলছেন, ‘‘আমরা চাই নতুন শিল্প হোক, মানুষ কাজ পাক। যে জমি আমরা শিল্পের জন্য দিয়েছি, সেখানে শিল্পই করতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

State Government Jindal Group Salboni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE