E-Paper

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ভিন্ন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করল রাজ্য সরকার, ভাঁওতা বলে কটাক্ষ বিজেপির

পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানান, ভিন‌্ রাজ্যে যাঁরা যান, তাঁদের মধ্যে ২২ লক্ষের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। বাকিদের নাম নথিভুক্ত করানোর কাজ চলছে।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৫:২৪
Mamata Banerjee.

—প্রতীকী ছবি।

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এ বার আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করল রাজ্য। তাতে ভিন‌্ রাজ্যে শ্রমিক-মজদুরের কাজ করতে গিয়ে এ রাজ্যের বাসিন্দারা অসুস্থ হলে বা দুর্ঘটনায় পড়লে, সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে পারবেন। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে জনজাতি, সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ডগুলোকে নিয়ে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে এমন প্রায় ২৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে দাবি তাঁর। সে সূত্রেই কেন্দ্রীয় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে এ রাজ্যে চালু না করার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের অনেক শ্রমিক-মজদুর রয়েছেন, যাঁরা বাইরে (ভিন‌্ রাজ্যে) কাজ করেন। আজ থেকে ওঁদের হাতে একটা আলাদা স্বাস্থ্যস্বাথী কার্ড দিচ্ছি। এঁরা বাইরে কাজ করেন। যখন শরীর খারাপ হয়, তখন ঘরে খবর পাঠান। যে ঘরের মানুষ তা ভাববে, দেখবে। কিন্তু তাঁদের চিকিৎসা করানোর টাকা থাকে না। আমাদের ২৮ লক্ষ বাইরে কাজ করে এমন শ্রমিক-মজদুরদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আলাদা ভাবে দিচ্ছি।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই কার্ডে পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সিএএ চালু হওয়ায় অনেক ভোট হারাবেন বুঝতে পারছেন। সে জন্য এ সব বলে পরিযায়ীদের সঙ্গে রাখার চেষ্টা করছেন। এ সব ভাঁওতা। গোটা দেশে ব্যবহারের জন্য যে কার্ড, সেটা আয়ুষ্মান ভারত। সেটা চালু করতে দেননি। ওঁদের কার্ড এ রাজ্যেই কাজ করে না! বাইরে কী ভাবে কাজ করবে?’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য বাজেটে (২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের জন্য) পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিমার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। তার পরে, তা রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাশ করানো হয়। সে অনুযায়ী, যে পরিযায়ী শ্রমিক, যে রাজ্যে কর্মরত, সেখানে স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পাওয়া যাবে। প্রশাসনিক দাবি, এ ক্ষেত্রে ‘ইনশিয়োরেন্স’-এর বদলে ‘অ্যাশিয়োরেন্স’ ভিত্তিতে কাজ হবে। অর্থাৎ, বিমার ‘প্রিমিয়াম’ দেওয়ার বদলে চিকিৎসার খরচ মিটিয়ে দেবে সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়া চালানোর জন্য তৃতীয় পক্ষ ব্যবহার করা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘কখনও, কোনও সমস্যা হলে তার দায়িত্ব নেব, আমরা তাঁকে দেখব।’’

পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানান, ভিন‌্ রাজ্যে যাঁরা যান, তাঁদের মধ্যে ২২ লক্ষের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। বাকিদের নাম নথিভুক্ত করানোর কাজ চলছে। কয়েক মাস আগে, রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের শ্রমিক গণেশ দাস। তাঁকে চিকিৎসার জন্য পূর্নিয়ায় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসার খরচ দিতে সমস্যা হওয়ায় সেখানে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে, জেলা প্রশাসন টাকা দিলে, তিনি বাড়ি ফেরেন। তাঁর দাদা কার্তিক দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ীদের জন্য যে কার্ড চালু করছেন, তা অনেকের কাজে আসবে। ভুক্তভোগীরা এটা ভাল বুঝবেন।’’

তথ্য সহায়তা: চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Swasthya Sathi Mamata Banerjee TMC West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy