রাস্তায় যানশাসনের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নতুন নয়। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশকর্তাদের কাছে ট্র্যাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। যার তদন্তে অভিযুক্তেরা অনেক সময়ে নিজেদের পক্ষে বক্তব্য পেশ করে থাকেন। এ বার ঠিক কী হয়েছে, তা জানতে জেলায় জেলায় ট্র্যাফিক পুলিশ এবং যানশাসনের দায়িত্বে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের ডিউটির সময়ে দেহ ক্যামেরার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে চাইছে রাজ্য পুলিশ। যাতে কোনও অভিযোগ উঠলে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, তা ওই দেহ ক্যামেরার ফুটেজ থেকে জানতে পারেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, এর জন্য জেলায় জেলায় যানশাসনের সঙ্গে যুক্ত পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের দেওয়া হয়েছে দেহ ক্যামেরা। ইতিমধ্যে এর জন্য প্রথম দফায় পাঁচ হাজার দেহ ক্যামেরা কেনা হয়েছে, যা তুলে দেওয়াহয়েছে তাঁদের হাতে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১০ হাজার দেহ ক্যামেরা গোটা রাজ্যে যানশাসনের সঙ্গে যুক্ত বাকিদের দেওয়া হবে বলে রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর।
রাজ্য পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করার সময়ে পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে প্রায়ই দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে ঠিক ভাবে জানতে এবার হাতিয়ার হচ্ছে দেহ ক্যামেরা। ঘটনার সময়ে পুলিশকর্মীদের দেহ ক্যামেরা ‘অন’ রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ওই ক্যামেরার রেকর্ডিং থেকে জানা যাবে, সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর ব্যবহার কেমন ছিল। এমনকি, অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত পক্ষের কথোপকথনও জানা যাবে ওই দেহ ক্যামেরা থেকেই।
প্রায় এক দশক আগে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ রাজ্যের মধ্যে প্রথম দেহ ক্যামেরার ব্যবহার শুরু করে। তার পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে যুক্ত আধিকারিক বা থানায় ডিউটিতে থাকা অফিসার, সকলের ক্ষেত্রেই ওই ক্যামেরার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে লালবাজার। শুধু কলকাতা পুলিশ এলাকাতেই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন থানাতেও পুলিশ অফিসারেরা এখন দেহ ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকেন। তবে জেলায় ট্র্যাফিক পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের মধ্যে ওই দেহ ক্যামেরা ব্যবহারের চল ছিল না। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, পুলিশের শীর্ষকর্তারা চান, যানশাসনের সঙ্গে যুক্তেরা দেহ ক্যামেরা ব্যবহার করুন। মূলত তাঁদের নির্দেশেই জেলায় জেলায় ট্র্যাফিক পুলিশ বা সিভিকদের জন্য ওই দেহ ক্যামেরা কেনা হচ্ছে। যাতে পথেঘাটে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠলে ফুটেজ দেখে ঠিক ভাবে তদন্ত করা যায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ক্যামেরার ভিডিয়ো ফুটেজ স্থানীয় থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখতে বলা হয়েছে।প্রতিদিনের ফুটেজ নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে। যাতে সময় মতো এবং প্রয়োজনে তা সহজে পাওয়া যায়। সূত্রের দাবি, যানশাসনের সঙ্গে যুক্ত পুলিশকর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে তাঁর দেহ ক্যামেরার মেমোরি ডিস্কে জায়গা আছে কিনা এবং তারঘড়ি ঠিক মতো কাজ করছে কিনা, সে সব দেখে নিতে হবে। ক্যামেরা কাজ না করলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জেনারেল ডায়েরি করতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)