Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
Parliament Security Breach

ললিতদের পিছনে কারা, চলছে সন্ধান

সংসদ-কাণ্ডে ললিতকে ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল গ্রেফতার করেছে। তবে দিল্লি পুলিশের তরফে লালবাজারের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রের দাবি।

lalit jha

ললিত ঝা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:১২
Share: Save:

সংসদে-কাণ্ডে অভিযুক্ত ললিত ঝা-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। পুলিশ সূত্রের খবর, ললিতের পরিচিত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন গোয়েন্দারা। আরও কয়েক জনের সম্পর্কে তথ্য মিলেছে। তার মধ্যে বালির সায়ন পাল এবং নদিয়ার বীরনগরের সৌরভ চক্রবর্তী নামে দুই যুবকের কথাও এসেছে। তবে তাঁদের সঙ্গে পুলিশ এখনও কথা বলেনি। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ললিতের পরিচিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি। তবে ললিতের সংগঠন এবং তার পিছনে কারা আছেন তা জানার চেষ্টা চলছে। সেই সূত্রেই ললিতের ঘনিষ্ঠ বা পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন গোয়েন্দারা।

সংসদ-কাণ্ডে ললিতকে ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল গ্রেফতার করেছে। তবে দিল্লি পুলিশের তরফে লালবাজারের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রের দাবি। তবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ললিত একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেই যুক্ত। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে গ্রুপ তৈরি করে ভগৎ সিংহ, সুভাষচন্দ্র বসু, বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত যুবকদের যুক্ত করা হয়। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সংগঠনগুলির পিছনে আসল মাথা কারা জানার চেষ্টা চলছে। সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপের অ্যাডমিনদেরও জিজ্ঞাসা করা হবে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, ললিত ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’ বলে একটি সংগঠনের সঙ্গে ছিলেন। গত জুলাই মাসে সেই সংগঠনের তরফে মিছিলের অনুমতি চেয়ে কলকাতা পুলিশকে একটি আবেদনপত্র দিয়েছিলেন। সেখানে সংগঠনের প্রতিনিধি হিসাবে হালিশহরের নীলাক্ষ আইচের পাশাপাশি সায়নেরও নাম ছিল। সায়ন অবশ্য শনিবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে ললিতের ব্যক্তিগত ভাবে আলাপ ছিল না। তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য ছিলেন। সেখানে প্রায় ৫০০ জন ছিলেন। সুভাষ চন্দ্র বসুকে নিয়ে কাজের সূত্রেই ললিতের সঙ্গে আলাপ বলে দাবি করেন সায়ন। এ-ও জানান, ললিতের কীর্তি সামনে আসার পরেই বেশির ভাগ সদস্য ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন।

সৌরভ চক্রবর্তী নামে আর এক যুবকের বাড়ি নদিয়ার বীরনগরে। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় ভূতত্ত্ববিদ হিসাবে কর্মরত। সৌরভের দাবি, সমাজ ও পরিবেশ সংক্রান্ত নানা গণ আন্দোলনের সঙ্গে তিনি যুক্ত। ‘রিজ়ার্ভেশন ফ্রি ইন্ডিয়া’ নামে একটি মঞ্চ গড়ে কলকাতায় পথসভাও তাঁরা করেছেন। গত ১৪ মে ললিতের সঙ্গে কফি হাউসে তাঁর আলাপ হয়। তাঁর আমন্ত্রণে দু’টি পথসভাতেও ললিত এসেছিলেন। সৌরভ বর্তমানে পুরীতে আছেন। এ দিন তিনি ফোনে বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। ঘটনার দিন ললিত আমাকে সংসদ ভবনের বাইরে প্রতিবাদের ভিডিয়ো পাঠিয়ে লিখেছিল, ‘ম্যায় প্রোটেস্ট কর রহা হুঁ। ইসে সার্কুলেট কর দো।’ আমি ওকে অডিয়ো মেসেজ পাঠিয়ে জানতে চাই, এটা কী? কেন? ও তার কোনও উত্তর দেয়নি। ওকে ফোন করারও চেষ্টা করেছিলাম, যোগাযোগ করা যায়নি।” সংসদ ভবনের বাইরে ললিতদের প্রতিবাদের ভিডিয়ো ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তিনি। সৌরভের দাবি, “মেসেজে ও পার্লামেন্টের কথা কিছু লেখেনি। ওটা যে সংসদ ভবনের বাইরে, সেটাও আমি বুঝতে পারিনি। বিষয়টি জানতে পারার পরে আমি ওই পোস্ট মুছে দিই।”

ললিত যে এমন কাণ্ড ঘটাবেন তা অবশ্য তাঁর পরিবার এবং পরিচিতরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না। ললিতের দাদা শম্ভুর দাবি, চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁর ভাই। ললিতের বাবা এবং মা বর্তমানে বিহারের দ্বারভাঙা জেলার বেহারা থানা এলাকার রামপুর উদয় গ্রামের বাড়িতে আছেন ললিতের বাবা-মা। এ দিন তারা আরও দাবি করে জানিয়েছেন, ওই ঘটনা নিয়ে কিছু জানতেন না। তবে ললিতকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে তাঁরা আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Parliament Security Breach Lalit Jha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE