—ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ বদলের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে গত চার দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে। শুক্রবার সেই বিক্ষোভ সামলাতে আরজি করে হাজির হলেন রাজ্যের শাসকদলের মুখপাত্র তথা আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু সেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সমিতির প্রাক্তন প্রধান তথা শাসকদলের নেতা সুদীপ্ত রায়ও।
শহরের পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অন্যতম হল আরজি কর। সেখানকার পড়ুয়া চিকিৎসকদের বিক্ষোভের জেরে গত চার দিন ধরে নিজের ঘরেই ঢুকতে পারেননি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ রেখে তার সামনেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আরজি করের পড়ুয়া চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সরকারি নির্দেশে সায় নেই তাঁদের। বিদায়ী অধ্যক্ষকেই আবার ফিরিয়ে আনতে হবে ওই পদে। যদিও পড়ুয়া চিকিৎসকদের অন্য অংশটির দাবি, তাঁরা সরকার নিয়োজিত নতুন অধ্যক্ষকেই স্বাগত জানাতে চান। কারণ বিদায়ী অধ্যক্ষ বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে বিভাজন করতেন।
পড়ুয়াদের এই দু’টির দলের মধ্যে দাবি এবং পাল্টা দাবির জেরে গত চার দিন ধরে টানা বিক্ষোভ চলছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল চত্বরে। যার ফলে গত সোমবার নতুন অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব নিলেও শুক্রবার পর্যন্ত হাসপাতালের সুপারের ঘরেই বসতে হয়েছে আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ মানসকে। বিক্ষোভের জেরে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজকর্মও। শুক্রবার সেই ‘অচলাবস্থা’ কাটাতেই ঘটনাস্থলে যান শান্তনুরা।
আরজি করে বিক্ষোভের কেন্দ্রে যে বিদায়ী অধ্যক্ষের বদলির সিদ্ধান্ত, তিনি অধ্যাপক চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ। গত ১১ সেপ্টেম্বরের স্বাস্থ্যভবনের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে হাড়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক সন্দীপকে। বদলে তাঁর জায়গায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদে বহাল করা হয় বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ সামলানো অধ্যাপক চিকিৎসক মানসকে। বদলির সেই নির্দেশ নিয়েই এর পর শুরু হয় বিক্ষোভ।
অধিকাংশ পড়ুয়া-চিকিৎসকই চাইছেন, কলেজে শান্তির পরিবেশ ফিরে আসুক। কিন্তু তা কবে হবে কিংবা কার হাত ধরে হবে, সে বিষয়ে সদুত্তর নেই কোনও মহলেই। বিক্ষোভকারী পড়ুয়া চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা দাবি থেকে সরবেন না। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দেশে ফেরার অপেক্ষা করছেন। তিনি ফিরলে অধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক চিকিৎসক সন্দীপকে ফেরানোর আর্জি জানাবেন তাঁরা। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন।
তবে সন্দীপকে আরজি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে বদলি করার ঘটনা এই প্রথম নয়। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও কিছু অভিযোগ উঠেছিল। এর আগে তাঁকে বদলিও করা হয়েছিল। সেই সময়ও ‘সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হাসপাতালের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। নতুন দায়িত্ব নিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল নতুন অধ্যক্ষকে। পরে সন্দীপকেই আবার ফিরিয়ে আনা হয় আরজি করের দায়িত্বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy