ছাত্র-যুব বিক্ষোভের জেরে কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতনের পর দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ৭২ বছরের সুশীলা কার্কী। শুক্রবার রাতে শপথবাক্যও পাঠ করেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও নেপালের পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে ভারত সরকারের। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি পরিবহণ যোগাযোগ রয়েছে নেপালের। তাই এমন পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি এক জরুরি বৈঠক করছে পরিবহণ দফতর। যেহেতু জরুরি ভিত্তিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে, তাই উত্তরবঙ্গের পরিবহণ আধিকারিকদের সঙ্গে কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠক করবেন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ওই বৈঠকে থাকতে পারেন পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল, পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন-সহ শীর্ষ দফতরের আধিকারিকেরা।
আগামী মঙ্গলবার ওই বৈঠকে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দুপুর তিনটে থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলার পরিবহণ আধিকারিকদের কাছে পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইবেন মন্ত্রী এবং দফতরের শীর্ষক কর্তারা। কারণ, বহু মানুষ পর্যটক হিসেবে উত্তরবঙ্গ থেকেই নেপালে যান। চলতি সপ্তাহে নেপালে বিক্ষোভ শুরু হতেই বেজায় বিপদে পড়েছিলেন নেপালে থাকা ভারতের পর্যটকেরা। পর্যটকদের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য সড়কপথে উত্তরবঙ্গ থেকে নেপাল যায়। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হলেও, ঝুঁকি নিতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাই চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ি থেকেই নেপাল পরিস্থিতির উপর নজর রেখে সেখানকার কর্মরত আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার সেই নির্দেশের পরেই পরিবহণ দফতর এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি ডেকেছে।
শনিবার মণিপুর সফরে গিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘হিমালয়ের কোলে অবস্থিত নেপাল আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দু’দেশের ইতিহাস ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। নেপাল ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসের সম্পর্কও রয়েছে। এ ভাবেই আমরা একসঙ্গে অগ্রগতির পথে এগোচ্ছি। এ হেন নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ১৪০ কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে আমি সুশীলা কার্কীকে অভিনন্দন জানাই। আমার বিশ্বাস, তিনি নেপালে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবেন।’’ নবান্নের শীর্ষকর্তারা মনে করছেন, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও নেপালের পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। আগামী দিনে নেপালের পরিস্থিতির প্রভাব যাতে ভারতে না পড়ে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই ধরনের বৈঠক তলব করা হয়েছে।