E-Paper

আন্দোলনকারীদের পাশে, কাউন্সেলিংয়ে এসেও নেই অনেকে

তাঁদের অনেকেই উচ্চ প্রাথমিকের স্কুলে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। পরীক্ষা দিয়ে উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকাতেও নাম উঠেছিল তাঁদের অনেকের। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি বদলেছে। সে অর্থে তাঁদের একটা চাকরি রয়েছে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৫
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক পদ প্রার্থীদের আন্দোলন।

উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক পদ প্রার্থীদের আন্দোলন। —ফাইল চিত্র।

তাঁদের আন্দোলন চলাকালীন বহু মানুষ বিভিন্ন ভাবে পাশে থেকেছেন। সাহস জুগিয়েছেন। এ বার সেই উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক পদ প্রার্থীদের পাশে খানিকটা অন্য ভাবে এসে দাঁড়ালেন কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকেরা।

তাঁদের অনেকেই উচ্চ প্রাথমিকের স্কুলে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। পরীক্ষা দিয়ে উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকাতেও নাম উঠেছিল তাঁদের অনেকের। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি বদলেছে। সে অর্থে তাঁদের একটা চাকরি রয়েছে। কিন্তু, কর্মহীন বহু যুবক-যুবতী উচ্চ প্রাথমিকের ওই চাকরির জন্য দীর্ঘদিন রাস্তায় নেমে আন্দোলন চালাচ্ছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে চাকরি পাওয়াটা অনেক বেশি জরুরি। তাই, তালিকায় নাম ওঠা বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষক বহু পথ পেরিয়ে সল্টলেকে কাউন্সেলিংয়ে এসেও কাউন্সেলিংয়ে অংশ না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যদিও অনেকের ফিরে যাওয়ার কারণ, বাড়ি থেকে স্কুলের অনেকখানি দূরত্বও।

বেশ কিছু দিন আগে কাউন্সেলিং শুরু হওয়ায় প্রথম দিকে শিক্ষকেরা পছন্দ মতো স্কুল বেছে নিতে পেরেছিলেন। এখন যে স্কুলগুলো বাকি আছে, তার তালিকা সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির দফতরের বাইরে বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে প্রাথমিকের শিক্ষকেরা কাউন্সেলিংয়ে অংশ না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন, তাঁদের যুক্তি, ফাঁকা পড়ে থাকা স্কুল বাড়ি থেকে অনেক দূরে। সেখানে তাঁদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই, তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন।

কিন্তু, তার পিছনে যে মানবিকতাও কাজ করছে, সেটা মানছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। কারণ, কাউন্সেলিংয়ে অংশ না নিয়ে ফিরে যাওয়ার সময়ে বেশ কিছু প্রাথমিক শিক্ষককে বলতেও শোনা গিয়েছে, তাঁরা যদি কাউন্সেলিংয়ে অংশ না নেন, তা হলে আরও শূন্যপদ তৈরি হবে। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, কর্মরত শিক্ষকেরা পাশে দাঁড়ানোয়, অপেক্ষমান তালিকায় থাকা অনেকে কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।

বীরভূমের সিউড়ির কাছে দইলকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক মহম্মদ রায়হান মুস্তাফা এসএসসির অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমার বাড়ির কাছে স্কুলগুলো ইতিমধ্যে অন্য চাকরিপ্রর্থীরা পছন্দ করে নিয়েছেন। তাই আমি কাউন্সেলিংয়ে গেলাম না। তাতে দু’টো শূন্যপদ বেঁচে গেল। এতে অপেক্ষমান চাকরিপ্রার্থীরা সুযোগ পাবেন।’’

চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শ্যামল দেবনাথ উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকায় সংরক্ষিত পদে র‌্যাঙ্ক করেছিলেন ৫ এবং সাধারণ তালিকায় ১৯। হবু শিক্ষকদের কথা ভেবে তিনিও কাউন্সেলিংয়ে অংশ নেননি। তিনি না আসায় দু’টো শূন্যপদ ফাঁকা হল। একটি সাধারণ স্কুলের সংরক্ষণ পদ। অন্যটি সাধারণ স্কুলের সাধারণ পদ। অপেক্ষমান তালিকায় থাকা দুই চাকরিপ্রার্থী এর ফলে সুযোগ পেলেন।

চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, সংরক্ষণের তালিকায় থাকা কোনও প্রাথমিক শিক্ষক যখন কাউন্সেলিং না করে চলে যাচ্ছেন, একসঙ্গে চারটি পদ খালি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ স্কুলের সাধারণ ও সংরক্ষিত পদের সঙ্গে মহিলা স্কুলেরও সাধারণ ও সংরক্ষিত পদ খালি হচ্ছে। উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মরত চাকরিপ্রার্থীরা এ ভাবে কাউন্সেলিংয়ে অংশ না নেওয়ায় আমাদের সুযোগ বাড়ছে। ওঁদের ধন্যবাদ জানাই।’’ এসএসসির এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত দশ শতাংশের মতো চাকরিপ্রার্থী নানা কারণে অনুপস্থিত থেকেছেন। তাঁদের মধ্যে কর্মরত শিক্ষকেরাও রয়েছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

counselling

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy