ফাইল চিত্র।
‘ভুতুড়ে’ তকমা স্টেশনের গায়ে সেঁটে ছিল বহু দিন। সেই মওকায় ‘ভূত’ পর্যটনের কারবার খুলেছে কিছু বহিরাগত—এমনই অভিযোগে এ বার পুরুলিয়ার বেগুনকোদরে সরব হয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’। অপপ্রচার রুখতে শনিবার সংগঠনের জেলা শাখার তরফে স্টেশন এবং লাগোয়া বামনিয়া এলাকায় প্রচার চালানো হয়। পোস্টারও সাঁটা হয়েছে। সংগঠনের পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক পেশায় চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁরা বলছেন, ‘বেগুনকোদরে ভূত দেখা যাবে’, তাঁরা ভূত দেখাতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আর না দেখাতে পারলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
‘ভুতুড়ে স্টেশন’-এর গুজবে অসন্তুষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশও। তাঁদের ক্ষোভ, ভূত চতুর্দশীতে (শনিবার) ভূত দেখার সুযোগ মিলবে এই মর্মে ‘বহিরাগত’ কিছু লোক প্রচার চালাচ্ছে বলে কানে এসেছে তাঁদের। এ দিন বেগুনকোদর স্টেশনে সাঁটা পোস্টারে ‘বিজ্ঞান মঞ্চ’-এর পাশাপাশি, নাম রয়েছে ‘গ্রামবাসীর’। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকার বদনাম ঘোচাতে শনিবার রাত থেকে তাঁরা পালা করে রাতে স্টেশন এবং লাগোয়া এলাকায় টহল দেবেন।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কোটশিলা-মুরি রেলপথের বেগুনকোদর স্টেশন ১৯৬০ সালে চালু হয়। বছর সাতেক পরে সেটি বন্ধ হয়। সে সময় ‘ভূত’-এর গুজব চরমে উঠেছিল। ২০০৭ সালে এলাকাবাসীর একাংশের দীর্ঘদিনের দাবিতে স্টেশনটি চালু হলেও, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে জনশূন্য হয়ে যেত। ২০১৭ সালে ‘বিজ্ঞান মঞ্চ’-এর সদস্যেরা বেগুনকোদর স্টেশনে রাত কাটিয়ে ‘ভূত’-এর ‘অস্তিত্ব’কে নস্যাৎ করেন। বরং, লাগোয়া এলাকায় কিছু অসামাজিক কার্যকলাপের প্রমাণ মিলেছিল বলে দাবি তাঁদের। কিন্তু এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূত পিছু ছাড়েনি বেগুনকোদরের। এ বার কালীপুজোর আগে সে অপপ্রচার ফের হাওয়া পায় বলে অভিযোগ।
বেগুনকোদর স্টেশনে পড়েছে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
নয়নবাবু বলছেন, ‘‘ভূত পর্যটনের নামে কিছু লোক এ সব রটাচ্ছে।’’ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও ক্ষুব্ধ। চা বিক্রেতা বাবলু কুমারের কথায়, ‘‘গভীর রাত পর্যন্ত ফি দিন স্টেশনে থাকি। আগে বোর্ডও লাগিয়েছিলাম যে, এখানে ও সব রটাবেন না।’’ আর এক বাসিন্দা তপনকুমার বিদ বলেন, ‘‘স্টেশনটা ফাঁকা জায়গায়। আগে তার আশেপাশে নানা অসামাজিক কাজ হত। তাই রটানো হয়েছিল স্টেশনে ভূত রয়েছে। সে ব্যাপারটাকেই কেউ রং চড়িয়ে ব্যবসায়িক কাজে লাগাবে ভাবলে ভাল লাগে না।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, গ্রামে বহিরাগতদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy