সরকারি নির্দেশিকায় অর্থ দফতরের দাবি, কর্মবিরতি ডাকার ফলে সব কর্মীকেই মেনে চলতে হবে সরকারের কড়া বিধি নিষেধ। অথচ ডান-বাম নির্বিশেষে প্রায় সব সরকারি কর্মচারী সংগঠনের দাবি, তারা এমন কর্মসূচির ডাকই দেয়নি! উল্টে কারা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে, তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) সরকারের কাছে তা-ই জানতে চাইছে কর্মচারী সংগঠনগুলি। যদিও এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০ মে নবান্ন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, কিছু সংগঠন ২২ মে থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। তাই, বিশেষ এবং অনেক আগে থেকে নেওয়া ছুটি ছাড়া অর্ধ বা পূর্ণ দিবসের ছুটি নেওয়া যাবে না। নিলে তা গ্রাহ্য হবে না। সে দিনের বেতন কাটা যাবে এবং দিনটিকে চাকরিজীবন থেকে বাদ দেওয়া হবে (ডায়েস নন)। অভিযোগ, কত দিন এই নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, তারও উল্লেখ রাখা হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে।
ফরওয়ার্ড ব্লক প্রভাবিত সংগঠন ‘স্টিয়ারিং কমিটি’ ইতিমধ্যেই অর্থ দফতরের কাছে আরটিআই করে জানতে চেয়েছে, কারা ওই কর্মবিরতি ডেকেছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সংকেত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘কোনও সংগঠন কর্মবিরতি ডেকেছে, সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। ফলে তা তো জানা দরকার।’’ ডিএ-র অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কেউ ডাক দেয়নি। তা হলে জানতাম। একটা অজুহাত দেখিয়ে কর্মীদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। “তাঁরাও আরটিআই করেছেন। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘যাঁরা নির্দেশিকা দিয়েছেন, তাঁরাই একমাত্র জানেন কারা ডাক দিয়েছে।’’
রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল এবং ইউনিটি ফোরামের নেতা দেবপ্রসাদ হালদারও জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও আন্দোলনের ডাক দেননি।
তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের শীর্ষনেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কেন্দ্রের কাছে বহু টাকা আটকে থাকার পরেও সাধ্য মতো ডিএ, বেতন-পেনশন সময় মতো দেওয়া হচ্ছে। এই বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন বিরোধীরা। কর্মচারীদের পরিস্থিতি বোঝা উচিত।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)