কেউ তাঁদের গ্রামের মানুষের জন্য বানিয়েছেন বাজার কমপ্লেক্স, কেউ তৃষ্ণার্ত পথচারীদের জন্য গ্রামে তৈরি করেছেন ওয়াটার এটিএম। কেউ বা গ্রামের খুদে পড়ুয়া আর তাদের মায়েদের জন্য তৈরি করেছেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য কেউ করেছেন পার্ক। কেউ স্কুলের পাঁচিল তুলে দেওয়ার কাজ করেছেন। কোনও গ্রামে আবার তৈরি হয়েছে সম্প্রীতি ভবন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রোজকার প্রশাসনিক কাজের ফাঁকে নিজেদের গ্রাম পঞ্চায়েতে এ ভাবেই একটু একটু করে বদল এনেছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানেরা। ওঁদের মতে, গ্রামকে পাল্টানোর এই প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশের পরিস্থিতিতে বদল আনা সম্ভব।
হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা— এই চার জেলাকে এমন ভাবে বদলে দেওয়া ২০ জন পঞ্চায়েত প্রধানকে সম্প্রতি সম্মানিত করল আল্ট্রাটেক সিমেন্ট পরিবার। এই ২০ জন হলেন ‘যশস্বী প্রধান’। চারটি জেলা থেকে ৭০০ জন যশস্বী প্রধান হতে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। বিচারকেরা জানান, ৭০০ জনের মধ্যে থেকে ২০ জনকে বেছে নেওয়া সহজ ছিল না। তবে যাঁরা যশস্বী প্রধান হলেন না, তাঁরাও নিজের নিজের গ্রাম পঞ্চায়েতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের স্বাক্ষর রেখেছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিশ্চিন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণেন্দু দাস ‘যশস্বী প্রধান’ হলেন তাঁর গ্রামে ছোটদের জন্য পার্ক তৈরি করে। কৃষ্ণেন্দু জানান, গ্রামে খেলার মাঠ অনেক আছে। কিন্তু, শহরের মতো ছোটদের পার্ক নেই। সেই ভাবনা থেকেই তাঁর এমন উদ্যোগ।
হাওড়ার বাণীবন পঞ্চায়েতের প্রধান সত্যজিৎ মণ্ডল বা হুগলির গরালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা রায়ের মনে হয়েছিল, তাঁদের গ্রামে ছ’বছর বা তার কম বয়সি শিশুদের জন্য পুষ্টি ও প্রাথমিক শিক্ষা দরকার। তা হলেই একটি শিশুর সার্বিক বিকাশ হবে। সেই ভাবনা থেকে সত্যজিৎ ও প্রতিমা তৈরি করেছেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র।
রাস্তায় এবং বাজারে গণ শৌচাগারের অসুবিধা ছিল উত্তর ২৪ পরগনার বেড়গুম (২) গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানকার প্রধান ঝুমা ঘোষ
‘যশস্বী প্রধান’ হয়ে জানালেন, পথে বিশেষত, মহিলাদের জন্য শৌচাগার না থাকায় তাঁদের ভীষণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই সকলের কথা ভেবে বারগুম বাজার এবং কাছারি বাজারে ঝুমা তৈরি করেছেন ‘কমিউনিটি টয়লেট’।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন সহ-অধিকর্তা রূপেন চৌধুরী বলেন, ‘‘এই যশস্বী প্রধানেরা গ্রামে বদল এনে আসলে দেশকে একটু একটু করে পাল্টাচ্ছেন। ভারতের অর্থনীতির জীবনরেখা পরিবর্তন করছেন ওঁরা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)