রোগী কমপক্ষে শ’দুয়েক। তাঁদের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২৫ হাজার টাকার ওষুধ। আর এর জন্য ডাক্তারের প্রণামী? মাত্র দশ টাকা! রোগী পিছু। দিলে ভাল। না দিতে পারলেও ডাক্তারের মুখে হাসি।
স্রেফ এই কারণে, ফি মাসের প্রথম রবিবারটার জন্য মুখিয়ে থাকেন পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সীমানা লাগোয়া অনেকগুলি গ্রামের মানুষজন। ওই দিন কলকাতার ডাক্তারবাবু আসেন মণিহারা গ্রামের ভিটেয়। প্রায় নিখরচায় রোগী দেখে দিয়ে যান মাসকাবারি ওষুধ। এমনটাই চলে আসছে বছর দু’য়েক ধরে।
পুরুলিয়ার কাশীপুর ও বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের সীমানায় মণিহারা গ্রাম। থানা কাশীপুর। অধিকাংশ বাসিন্দাই প্রান্তিক চাষি। কাছেপিঠে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বলতে ১০ কিলোমিটার দূরে তালাজুড়িতে। মণিহারা গ্রামে চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেম্বারে এক দিনেই অন্তত দু’শো রোগী আসেন। স্থানীয় প্রৌঢ়া তুলসী ধীবর, আদরী গড়াইরা বলেন, ‘‘আমাদের এখানে ডাক্তারের বড় অভাব। উনি আছেন বলে ভরসা পাই।’’ এমনই এক রবিবার চেম্বারে গিয়ে দেখা গেল, মণিহারার পাশের গ্রাম শিয়ালডাঙার বৃদ্ধা নুনিবালা গড়াই এসেছেন শ্বাসকষ্ট নিয়ে। মাত্র ১০ টাকা দিলে মেলে চিকিৎসকের পরামর্শ, উপরন্তু সারা মাসের ওষুধ। নামমাত্র খরচে অস্ত্রোপচারের বন্দোবস্তও হয়ে যায়। সেই সমস্ত কথা শুনে বাঁকুড়ার শালতোড়ার মণিকা কর্মকারের মতো অনেকে এসেছিলেন দূর-দূরান্ত থেকে।