মিস্ড কলের মাধ্যমে পরিচয়। তার পর বন্ধুত্ব। তার সুযোগ নিয়ে নাবালিকাকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করেছিলেন তিন তরুণ। পরে সেই নাবালিকাকে খুনও করা হয়। তার পর দেহ ফেলা হয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। ১০ দিন পর উদ্ধার হয় ধর্ষিতার দেহ। বছর চারেক আগে জলপাইগুড়ির সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত তিন যুবকের ফাঁসির সাজা হল।
জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সুর এই সাজা ঘোষণা করেছেন। ওই ঘটনাকে ‘বিরলতম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণা হওয়ার পর নাবালিকারা বাবা বলেন, ‘‘আজ আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পেল। আমি বার বার বলে আসছিলাম, আমার মেয়ের খুনিদের ফাঁসি হোক। আজ আমি খুব খুশি এই রায়ে।’’
রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা বছর ষোলোর ওই কিশোরী ২০২০ সালের ১০ অগস্ট নিখোঁজ হয়। পরিবার থানায় অভিযোগ জানানোর পরেই তদন্তে নামে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় রহমান আলি নামে এক যুবককে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় রহমানের দুই বন্ধুকে। তাঁদের নাম জামিরুল হক এবং তমিরুল হক। এই তিন জনকেই ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।
সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত জানান, নিখোঁজ হওয়ার আগে মেয়েটির মোবাইলে একটি ফোন এসেছিল। তার পরেই নাবালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। তদন্তে জানা যায়, রহমানই তাকে ফোন করেছিল। নিখোঁজ হওয়ার দু’দিন পর নাবালিকা এক আত্মীয়কে ফোন করে জানিয়েছিল, তাকে চটের হাটে নিয়ে গিয়েছে রহমান। তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। রহমানেরা গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে, নাবালিকাকে ১০ দিনে ধরে একাধিক বার ধর্ষণ করেছে তিন বন্ধু মিলে। তার পর জামিরুল নিজের পরনের গেঞ্জি খুলে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে।
দেবাশিস বলেন, ‘‘তদন্তে নাবালিকাকে খুনে ব্যবহৃত গেঞ্জি উদ্ধার হয়। নাবালিকাকে যে সব হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই সব হোটেলের কর্মী-সহ মোট ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। উদ্ধার হয়েছিল তিন দোষীর মোবাইল ফোনও।’’