Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
COVID19

Coronavirus in West Bengal: বিপদ বাড়ছে! কোভিডের দৈনিক সংক্রমণের হারে শীর্ষে থাকা কেরলের পরেই উঠে এল বাংলা

সংক্রমণের হারে দেশে সবার আগে কেরল। তার পরেই পশ্চিমবঙ্গ। চিন্তিত স্বাস্থ্য ভবন। করোনার একটা বিশেষ রূপের জন্যই এই বৃদ্ধি বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ২০:১৫
Share: Save:

রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে লাফিয়ে। ৬ জুন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের ঘরে। ৬ জুলাই সেই সংখ্যা দু’হাজার ছাড়াল। আর সংক্রমণের হারের নিরিখে শীর্ষে থাকা কেরলের পরেই এখন পশ্চিমবঙ্গ। সর্বশেষ পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিনটি রাজ্যে সংক্রমণের হার দুই অঙ্কের উপরে। কেরল, পশ্চিমবঙ্গ এবং মিজোরাম। এ রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বুধবারই স্বাস্থ্য ভবন রাজ্যের সমস্ত বড় সরকারি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে। অদূর ভবিষ্যতে কোভিড রোগীদের জন্য আবারও বেশি সংখ্যায় শয্যার প্রয়োজন পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে এবং তৈরি থাকতে বলা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘করোনার একটি বিশেষ রূপের জন্যই গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যেই আমরা নতুন নির্দেশিকা জারি করেছি।’’

করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে অল্প অল্প করে হলেও বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা। আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের আধিকারিক জানান, গত মাসে ওই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড প্রায়শই ফাঁকা থাকত। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার ওই হাসপাতালে করোনা নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫ জন। কলকাতা এবং সল্টলেকে তিনটি শাখা থাকা এক বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য রয়েছে ৬১টি শয্যা। বুধবার এর ৫২টিতেই রোগী ভর্তি রয়েছেন বলে জানান হাসপাতালের এক কর্তা। এর মধ্যে ২৪ জন রোগী ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগে চিকিৎসাধীন।

রাজ্যে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা।

রাজ্যে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

মঙ্গলবার দেওয়া রাজ্য সরকারের কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ১৫.৯৩ শতাংশ। শীর্ষে থাকা কেরলে এই হার ১৬.৮৭ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের ঠিক পরে আছে মিজোরাম। এই রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণের হার ১৫.২৯ শতাংশ। কেরল বা মিজোরামের কোনও নতুন রিপোর্ট না এলেও, পশ্চিমবঙ্গে বুধবার প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণের হার আরও বেড়ে হয়েছে ১৬.২৪ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ রাজ্যে বিভিন্ন জেলার মধ্যে কলকাতায় সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। ২৮ জুন থেকে ৪ জুলাইয়ের মধ্যে গড়ে ৪১.৩১ শতাংশ। হাওড়ায় এই হার ২১.১৯ শতাংশ। হুগলিতে ১৮.৯৫। এই তিন জেলা ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান, দার্জিলিং, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কালিম্পং এবং বাঁকুড়ায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের উপরে।

দৈনিক কোভিড সংক্রমণের হার অনুযায়ী, শীর্ষে থাকা তিন রাজ্য।

দৈনিক কোভিড সংক্রমণের হার অনুযায়ী, শীর্ষে থাকা তিন রাজ্য। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্বাস্থ্য দফতর এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত বলেই জানাচ্ছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘‘বর্তমানে করোনার যে রূপ রয়েছে তা বেশি সংক্রামক হলেও ক্ষতি করার ক্ষমতা কম।’’ একাধিক চিকিৎসকের মতে, এখন যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের বেশির ভাগেরই মৃদু বা ‘মাইল্ড’ উপসর্গ। তবে করোনায় আক্রান্ত হলে জ্বরের পাশাপাশি পাল্সঅক্সিমিটারে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দেখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বয়স্ক এবং কো-মর্বিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তিরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁদের বিশেষ খেয়াল রাখারও উপদেশ চিকিৎসকদের।

রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে টিকাকরণেও জোর দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের কোথাও করোনার নতুন রূপ হানা দিচ্ছে কি না তা জানতে, করোনার পরীক্ষার জন্য সংগৃহীত নমুনার নিয়মিত জিন পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওমিক্রন রূপই এখনও ‘রাজত্ব করছে’ রাজ্যে। তবে ওমিক্রমের বেশ কিছু সাব-লিনিয়েজ বা উপরূপ রয়েছে। সেগুলির উপর আলাদা ভাবে নজর রাখা হচ্ছে। এগুলির মধ্যে বেশি সংক্রামক বলে চিহ্নিত ‘বিএ.২.৭৫’ উপরূপটি এখনও বাংলায় মেলেনি বলেই সূত্রের খবর। তবে ওমিক্রনের বেশ কিছু উপরূপের উপস্থিতি মিলেছে এবং বাংলায় সেগুলির কোনও রূপান্তর বা বদল ঘটেছে কি না তা নিয়ে গবেষণা চলছে বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গবেষক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID19 Corona in West Bengal Covid positivity rate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE