Advertisement
E-Paper

‘রেপ’-এর হুমকি ছাত্রীকে, অভিযুক্ত তৃণমূল

চৌমুহার স্মৃতি ফিরে এল লাভপুরে। নিজেরই বাড়ির দোরগোড়ায় এক কলেজছাত্রী শুনলেন, ‘বাবাকে অভিযোগ তুলে নিতে বল। না হলে তুলে নিয়ে ‘রেপ’ করে দেব।’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৩

চৌমুহার স্মৃতি ফিরে এল লাভপুরে।

নিজেরই বাড়ির দোরগোড়ায় এক কলেজছাত্রী শুনলেন, ‘বাবাকে অভিযোগ তুলে নিতে বল। না হলে তুলে নিয়ে ‘রেপ’ করে দেব।’ শুনলেন যিনি, তাঁর বাবা লাভপুরের কাপসুন্দি গ্রামের সিপিএম কর্মী। হুমকি যারা
দিয়েছে, তারা ওই গ্রামেরই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী বলে তরুণীর অভিযোগ। লাভপুরের বিডিও-র কাছে বুধবার লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।

গত লোকসভা ভোটের পরে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের চৌমুহা গ্রামের এক সভায় স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে হুমকি দিয়ে
বলেছিলেন, ‘‘আমি প্রচুর মস্তানি করেছি। একটা কেউ বিরোধী মস্তানি করতে এলে, আমাদের ছেলেদের ঢুকিয়ে
রেপ করে দেব!’’ লাভপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘এটাই তো তৃণমূলের সংস্কৃতি। এর আগে ওদেরই এক সাংসদ একই হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁদের দলের কর্মীরাও এমন কথা বলবে, এ আর নতুন কী!’’

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। দলীয় পতাকা ছেঁড়াকে ঘিরে কাপসুন্দি গ্রামে সিপিএম এবং তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা বাধে। আহত হন কয়েক জন। সিপিএমের দুই কর্মীকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে লাভপুর থানার ওসি দেবাশিস ঘোষের মদতে তাদের সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল বলেও অভিযোগ সিপিএমের। মঙ্গলবার বাম-কংগ্রেস জোট একযোগে ওসি-র অপসারণের দাবিতে লাভপুরের রিটার্নিং অফিসার তথা বিডিও-কে স্মারকলিপি দেয়। তৃণমূলও পাল্টা হামলার অভিযোগ করে। মঙ্গলবার স্থানীয় পুশুলিয়া গ্রামের এক সিপিএম কর্মী ও কাপসুন্দির দুই তৃণমূল কর্মী গ্রেফতার হন।

সেই সূত্রেই এ দিন হাসপাতালে ভর্তি এক সিপিএম কর্মীর মেয়েকে ‘রেপ’ করে দেওয়ার হুমকি শুনতে হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, সোমবার রাতে তৃণমূলের হাতে মার খাওয়ার পরে আত্মীয়েরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গেলে মেরে ফেলার হুমকি শোনেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সিপিএম নেতারা ওই কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করান। সন্ধ্যায় পুলিশে অভিযোগ করেন।

এ দিন তাঁরই মেয়ে, লাভপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বিডিও-র কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, গ্রামের কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী মঙ্গলবার রাত থেকেই তাঁদের হুমকি দিচ্ছে। এ দিন এসে শাসায়, তাঁর বাবা ওই অভিযোগ না তুললে মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রেপ করা হবে। এই অবস্থায় গোটা পরিবার উদ্বেগে। ওই তরুণীর কথায়, ‘‘আমার বড়দা সেনাকর্মী, নাসিকে থাকেন। অন্য দুই দাদা কলকাতায়। বাবা হাসপাতালে। দাদু আর মাকে নিয়ে আমি গ্রামে রয়েছি। নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হলে আমাদের গ্রাম ছেড়ে বাধ্য হয়ে চলে যেতে হবে।’’

বিডিও জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস কোনও মন্তব্য করেননি। তবে ঘটনার কথা জেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছেছে। যদিও অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেছেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। লাভপুর থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ এ দিনই নানুরে পতাকা টাঙানোকে কেন্দ্র করে চার সিপিএম কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Rape Threatning
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy