Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Jitendra Tiwari

পাণ্ডবেশ্বরে সভা তৃণমূলের, ডাক নেই বিধায়ক জিতেন্দ্রকে, আবার ছড়াচ্ছে জল্পনা

আসানসোলের প্রাক্তন পুর প্রশাসকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না!’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:০৬
Share: Save:

তাঁর ‘খাসতালুকে’ তৃণমূলের কর্মসূচি। অথচ জিতেন্দ্র তিওয়ারিকেই আমন্ত্রণ জানাল না দল! পাণ্ডবেশ্বরের দলীয় সভায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার সব নেতা-নেত্রীকে ডাকা হলেও বাদ পড়েছেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্রই। যা শুনে আসানসোলের প্রাক্তন পুর প্রশাসকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না!’’

তৃণমূল দল এবং আসানসোল পুর প্রশাসকের পদ ছাড়লেও এখনও বিধায়কের পদ ছাড়েননি জিতেন্দ্র। অর্থাৎ, খাতায়কলমে তিনি এখনও পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। সেই পাণ্ডবেশ্বরেই নতুন বছরের গোড়ায় ২ জানুয়ারি মহিলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভা। অথচ পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ককেই সেই সভায় ডাকা হয়নি। সভায় মূল বক্তা রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, দুর্গাপুরের প্রাক্তন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়, বর্তমান মেয়র দিলীপ অগস্তি-সহ জেলার প্রায় সব নেতা-নেত্রী। নেই শুধু জিতেন্দ্র।

কেন নেই, তার কোনও কারণ তৃণমূলের তরফে জানানো হয়নি। তবে স্বয়ং জিতেন্দ্রর ব্যাখ্যা, ‘‘আমি দল এবং সরকারি পদ ছেড়েছিলাম। আবার দলে ফিরেছি। কিন্তু পাণ্ডবেশ্বর-সহ আসানসোল-দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ এখনও আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার প্রভাব পড়েছে দলের শীর্ষনেতৃত্বের আমন্ত্রণেও।’’ একই সঙ্গে অবশ্য জিতেন্দ্র প্রত্যয়ী, ‘‘আগামিদিনে আমার কাজ দিয়েই প্রমাণ করব, আমি তৃণমূলেরই।’’

আরও পড়ুন: ‘কুপুত্র’ শুভেন্দুর সঙ্গে বিধানসভায় লড়তে তৈরি হচ্ছেন ‘নন্দীগ্রামের মা’

তবে এই সোজাসাপ্টা ব্যাখ্যা মানতে নারাজ অনেকেই। কেন্দ্রীয় অনুদান না নেওয়ায় পুরমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ক্ষোভ জানিয়ে দল ও সরকারি পদ ছেড়েছিলেন আসানসোলের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র। তাঁর গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হতেই বাবুল সুপ্রিয়-সহ একাধিক বিজেপি নেতা তাঁকে দলে নেওয়ার বিষয়ে খোলাখুলি আপত্তি তুলেছিলেন। ফলে পিছিয়ে গিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। কলকাতায় এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ব্যর্থ চেষ্টার পর বেশি রাতে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠকের পর জিতেন্দ্র জানিয়েছিলেন, তিনি ভুল করেছিলেন। তৃণমূলেই আছেন এবং দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবেন।

পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরে রামসীতা মন্দিরে সস্ত্রীক পুজো দিলেন স্থানীয় বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। —নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: রাজ্যের ৫ জায়গায় সিবিআই হানা, তল্লাশি কলকাতার প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর বাড়িতেও

এই পর্যন্ত কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু তার পরেও জিতেন্দ্র ফেসবুকে পোস্ট করে বসেন, ‘রাজনীতিতে ফুলস্টপ বলে কিছু হয় না।’ পরের দিনই আবার টুইট করেন, তাঁর বিজেপি-তে যাওয়ার জল্পনা যাঁরা উস্কে দিচ্ছেন, তাঁদের উৎফুল্ল হওয়ার কারণ নেই। তার পরেও আবার তাঁকে কলকাতার এমন একটি পাঁচতারা হোটেলে দেখা গিয়েছে, যেখানে বিজেপি নেতারাও ঘটনাচক্রে হাজির! যদিও জিতেন্দ্র দাবি, তিনি ওই হোটেলে পরিবারকে নিয়ে নৈশাহার সারতে গিয়েছিলেন। বিজেপি-র সঙ্গে কোনও বৈঠকই তাঁর হয়নি। কিন্তু এ ভাবে বার বার জল্পনা উস্কে দেওয়া এবং এমন একাধিক ঘটনাক্রমের জেরেই সম্ভবত তাঁকে এড়িয়ে চলার কৌশল নিয়েছে তৃণমূল।

তবে পাণ্ডবেশ্বরের সভায় পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ককেই না আমন্ত্রণ জানানোয় জল্পনা আবার শুরু হয়েছে। এ বারের জল্পনা— তা হলে কি জিতেন্দ্র সঙ্গে এ বার দূরত্ব বাড়াতে শুরু করল তৃণমূলই? এ বিষয়ে শেষকথা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে দল তাঁকে বিশ্বাস করে না (ভাষান্তরে, দল তাঁকে অবিশ্বাস করে), জিতেন্দ্রর এই মন্তব্যে অভিযোগ-অনুযোগের সুর স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jitendra Tiwari Pandabeswar tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE