Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Abhishek Banerjee

‘সিবিআইকে চ্যালেঞ্জ করে এসেছি’! দিলীপ-শুভেন্দুকে কেন ডাকছে না, প্রশ্ন তুলে খোঁচা অভিষেকের

সিবিআইয়ের জেরা শেষে নিজাম প্যালেসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে, তেমনই তাঁর আক্রমণের মুখে পড়লেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ।

Abhishek Banerjee attacked Suvendu Adhikari and Dilip Ghosh.

অভিষেকের আক্রমণের মুখে শুভেন্দু-দিলীপ। নিজস্ব ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ২১:৫৮
Share: Save:

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়েই রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দিকে, তিনি যেমন নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে, অন্য দিকে, তাঁর আক্রমণের মুখে পড়লেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করার পাশাপাশি, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দিকে।

শনিবার রাতে নিজাম প্যালেসের বাইরে এসে অভিষেক বলেন, ‘‘আমার কাছে বেশ কিছু নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি তাঁদের চিনি না। যাঁদের নাম বলা হয়েছিল, তাঁদের বেশির ভাগই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। কেউ কেউ আবার মুর্শিদাবাদের। ওই সময় আমাদের দলের তরফে কে দায়িত্বে ছিল ওই দুই জেলায়? সবাই জানে। তাঁকে কেন ডাকা হচ্ছে না?’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে এখানে ডাকা হয়েছে। আর সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের তো সিবিআই জেরা করার জন্য ডাকে না। বিজেপি করলে বা বিজেপির তল্পিবাহক হলেই কি সিবিআইয়ের জেরা থেকে ছাড় মেলে।’’ যদিও এক বারের জন্যও এই পর্বে একটি বারের জন্যও তিনি শুভেন্দুর নাম মুখে আনেননি।

তবে এর পর নারদকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন অভিষেক। সেই সময়ে তিনি বলেন, ‘‘নারদ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এখন এ রাজ্যের বিজেপির বিরোধী দলনেতা। তাঁকে কেন জেরার জন্য ডাকতে পারছে না সিবিআই? বিজেপি করলেই সাত খুন মাফ, আর তৃণমূল করলেই সিবিআই, ইডি ও আয়কর দিয়ে হেনস্থা করা হবে। আমি মাথা নত করব না, যে কোনও অবস্থাতেই আমরা বিজেপিকে ছেড়ে কথা বলব না।’’

শুভেন্দুকে সারদা মামলায় অভিযুক্ত করে অভিষেক বলেন “সারদা মামলার প্রাইম এফআইআর নেমড শুভেন্দু অধিকারী। কত বার ডেকেছে সিবিআই? গ্রেফতার হয়েছে? শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপির সম্পদ? দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া গেল প্রসন্নর বাড়িতে। সে বিজেপির সম্পদ?” শুধু শুভেন্দু-দিলীপ নয় অন্য বিরোধী দলগুলিকেও নিশানা করে তিনি বলছেন, “আমায় ডাকল কুন্তল ঘোষের চিঠিতে নাম আছে বলে। তা হলে সারদা কর্তার চিঠিতে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তী, অধীর চৌধুরীকে ডাকা হবে না কেন? সুদীপ্ত সেন চিঠিতে লিখেছে তো। তাঁদের ডেকে এক বারও জেরা করেছে সিবিআই?”

অভিষেকের অভিযোগের জবাবে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমার ভাইকেও চার বার ১০ ঘণ্টা করে জেরার নামে হেনস্থা করা হয়েছিল। লোকের খারাপ করলে নিজের খারাপ হয়। এই কথাটা যেন উনি মনে রাখেন।’’

সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আমরা দল থেকে সাসপেন্ড করেছি। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল উদ্ধার হলেও, তাঁকে সিবিআই ডাকে না।’’ অভিষেকের কথায়, ‘‘দেশের আইন সবার জন্য এক হওয়া উচিত। একটি সংবাদমাধ্যমের কনক্লেভে অমিত শাহ বলেছিলেন, সিবিআই আমাকে নরেন্দ্র মোদীর নাম বলতে বলেছিল। তাঁকে কিন্তু সিবিআই ডাকার সাহস করছে না। আর কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে ডাকা হচ্ছে। অথচ আমি তৃণমূল করি বলে, আমাকে বার বার ডেকে পাঠানো হচ্ছে।’’

বাঁকু়ড়ায় তাঁর ‘জনসংযোগ যাত্রা’র কর্মসূচি চলাকালীন শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ সিবিআইয়ের তলব পান অভিষেক। সেখানেই কর্মসূচি শেষ করে তড়িঘড়ি কলকাতায় ফেরেন তিনি। নিজের সেই অভিজ্ঞতা থেকে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘নবজোয়ার রুখতেই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। আমাকে ডাকাডাকি বন্ধ করুন। আমাকে মা, বাবা, দলনেত্রী সবাই এমন কর্মসূচি করতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু আমি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এই কর্মসূচি শুরু করেছিলাম। এই কর্মসূচিতে জনমানসের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে বিজেপি ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই আমাকে আটকানো চেষ্টা হয়েছে।’’ তাঁর আরও জবাব, ‘‘আমি দিল্লির কুকুর হয়ে থাকতে নারাজ। আমি রয়েল বেঙ্গল টাইগার হয়েই থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE