তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের নিশানায় পুলিশ ছিলই। এ বার ভাঙড়ে শাসকের নিশানাতেও পুলিশ!
সোমবার বিকেলে ভাঙড়ের কাশীপুর থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম পুলিশের বিরুদ্ধে ঠিকমতো কাজ না-করার অভিযোগ তোলেন। হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘নির্বাচনের সময় থানায় বসে থাকলে হবে না। যারা ভাঙড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে, তাদের না ধরে থানায় বসে রয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে হবে। মানুষকে বাঁচাতে হবে। লোকদেখানো দু’-এক জনকে ধরলে হবে না।’’
বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘উনি কী বলেছেন, জানা নেই। মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন থেকে এখনও পর্যন্ত ৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে রুট মার্চ করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
গত রবিবার ভাঙড়ের শোনপুর বাজারে নওশাদ সিদ্দিকী ও সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ছিলেন আইএসএফের সভায়। সেখানে বিকাশ পুলিশকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘‘জনগণের করের টাকায় আপনাদের মাইনে হয়। আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলাম বাহিনী আপনাদের মাইনে দেয় না। উর্দির আড়ালে আইনের অপব্যবহার করলে কেউ বাঁচবেন না।’’
সোমবার কাশীপুর থানার সামনে পাল্টা সভার আগে শোনপুর বাজার থেকে প্রায় চার কিলোমিটার মিছিল করে তৃণমূল। ছিলেন ভাঙড়ের দলীয় পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম, তাঁর পুত্র হাকিমুল-সহ ব্লক নেতৃত্ব। কয়েক দিন আগেও শোনপুর বাজারে জনসভা থেকে পুলিশকে আক্রমণ করেছিলেন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত।
এ দিন নওশাদকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে আরাবুল বলেন, ‘‘ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ভাঙড় থেকে বার করে দেওয়া হবে। তাঁকে ফুরফুরায় পাঠিয়ে দিতে হবে।’’ সওকাত বলেন, ‘‘বিধানসভায় নওশাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আমি তাঁকে ভাই সম্বোধন করে ডাকলাম। এখন সে কিনা আমাকে বলে, বাঘ বিড়াল হয়ে গিয়েছে। ছুঁচোর গায়ে যতই আতর মাখাও না কেন, তার গায়ের গন্ধ যাবে না।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘হাই কোর্টে সিপিএমের ১৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন খারিজ হয়ে গিয়েছে। আইএসএফের ৮২ জনের মনোনয়নও বাতিল হয়ে যাবে।’’
নওশাদ পাল্টা বলেন, ‘‘সওকাত মোল্লা সাহেবের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, উনি বিচারক। রায় দেবেন। আরাবুল সাহেবরা কুকথা বলে সংবাদের শিরোনামে থাকতে চান। আমি ভাঙড়ের মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছি। কেউ ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করতে পারবে না।’’
হুঁশিয়ারি অবশ্য শুধু আরাবুলই দেননি, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ মোমিনুল ইসলামের কণ্ঠেও শোনা গিয়েছে সেই সুর। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেবেন না, তাঁদের কৃষকবন্ধু, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী— কোনও কিছুই দেওয়া হবে না। সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy