Advertisement
E-Paper

দিলীপকে ‘আমন্ত্রণ’ রুমার, চাপানউতোর

এই পরিস্থিতিতে দিলীপবাবুর সভায় রুমাদেবীর উপস্থিতি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলে। যদিও কয়েক মাস আগে বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে বিজেপি সভাপতি-র হাসিমুখের একটি ছবি শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩৫
সৌজন্য! দিলীপ ঘোষের সভায় রুমা পাড়িয়াল। নিজস্ব চিত্র

সৌজন্য! দিলীপ ঘোষের সভায় রুমা পাড়িয়াল। নিজস্ব চিত্র

এত দিন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল বলে কংগ্রেসের অন্দরমহলের দাবি। এ বার বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির সভায় গিয়ে সেই বিধায়কের স্ত্রী, তথা তৃণমূল প্রার্থী ‘বাড়িতে আমন্ত্রণ’ জানালেন। এই ঘটনায় বিধায়কের ‘রাজনৈতিক অবস্থান’ নিয়ে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে। এ বার তা তৃণমূলের অন্দরে।

শুক্রবার সকালে দুর্গাপুর বাজারে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীকে নিয়ে পথসভা করছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই সময়ে এলাকায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী, তথা ‘কংগ্রেস’ বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের স্ত্রী রুমাদেবীও। সেখানেই দিলীপবাবুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাড়ি আসার আমন্ত্রণ জানান রুমাদেবী। সেই সঙ্গে দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘বিশ্বনাথবাবু আজ বাড়িতে খাওয়ার নিমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন।’’

এই ঘটনার খবর চাউর হতেই চাপানউতোর শুরু হয় তৃণমূলের অন্দরে। দুর্গাপুরে পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা দিনক্ষণ ঘোষণার এক দিন আগে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে রুমাদেবী ও বিশ্বনাথবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত কয়েক জন তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের পুরভোটে টিকিটও দিয়েছে তৃণমূল। শহরবাসীর মতে, তাঁদের হয়ে ভোট-প্রচারে মাঝেসাঝেই দেখা যাচ্ছে বিশ্বনাথবাবুকেও।

এই পরিস্থিতিতে দিলীপবাবুর সভায় রুমাদেবীর উপস্থিতি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলে। যদিও কয়েক মাস আগে বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে বিজেপি সভাপতি-র হাসিমুখের একটি ছবি শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই সময়ে বিশ্বনাথবাবু বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলেও জল্পনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে ভোট প্রচারে সেই জল্পনা আরও উস্কে দেন দিলীপবাবু। ওই দিন বেনাচিতির পাঁচমাথার মোড়ে পথসভায় তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম এলাকার বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ‘মেয়র’ হতে তৃণমূলে যাচ্ছেন। তাঁকে বলি, ভুল জায়গায় যাবেন না। বিজেপিতে যোগ দিন। বিজেপি-র দরজা এখনও খোলা।’’

তৃণমূল কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, যে দিলীপবাবু প্রায় প্রতি দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গুচ্ছ ‘বিষোদগার’ করছেন, সেখানে তাঁকেই ‘আমন্ত্রণ’ জানান কী ভাবে তৃণমূলেরই এক প্রার্থী। এই ঘটনায় দলের নীচুতলাতেও ভুল বার্তা যেতে পারে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের আশঙ্কা। তা ছাড়া বিশ্বনাথবাবুকে নিয়ে দলের অন্দরেই যথেষ্ট ‘কোন্দল’ রয়েছে, এই ঘটনা সেই কোন্দলকে আরও বাড়াবে বলেই দাবি। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের যদিও দাবি, ‘‘এটা রাজনৈতিক সৌজন্য। বিজেপি-র কাছ থেকে অবশ্য যদিও রাজনৈতিক সৌজন্য আশা করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের কাছ থেকে তাঁরা সৌজন্য শিখুন।’’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের রুমাদেবী জানিয়েছেন, বাড়িতে খাওয়ার নিমন্ত্রণের কোনও কথা হয়নি। শুধু নমস্কার বিনিময় হয়েছে।

তবে কেন এমন ঘটনা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের একাধিক নেতার দাবি, পুরভোটে পছন্দমতো ফল না হলে যাতে বিজেপি-র দরজাও খোলা থাকে, সে জন্যই এমন পদক্ষেপ বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী’র।

এ দিনের ঘটনার পরে কংগ্রেসের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী অবশ্য ফের বলেছেন, ‘‘নিজের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে বিশ্বনাথবাবু নির্লজ্জের মতো দু’নৌকায় পা দিয়ে চলছেন। সাহস থাকলে বিধায়ক পদ ছাড়ুন।’’ যদিও এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে বিশ্বনাথবাবুর মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে।

Dilip Ghosh BJP TMC বিশ্বনাথ পাড়িয়াল রুমা পাড়িয়াল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy