Advertisement
E-Paper

প্রয়াত হলেন রামপেয়ারি রাম, তৃণমূল নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া বন্দর এলাকায়

বার্ধক্যজনিত নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রামপেয়ারি। বেলা ১১টা ৭ মিনিট নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ৬ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৭
TMC leader Ram Pyare Ram passed away.

প্রয়াত তৃণমূল নেতা রামপেয়ারি রাম। ছবি: সংগৃহীত।

প্রয়াত হলেন তৃণমূল নেতা রামপেয়ারি রাম। দীর্ঘ দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। রবিবার সকালে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। কয়েক দিন আগে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেলা ১১টা নাগাদ মৃত্যু হয় বর্ষীয়ান এই নেতার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। রামপেয়ারি মৃত্যুতে কলকাতা বন্দর এলাকায় রাজনীতির একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হল। শোকের ছায়া কলকাতা বন্দর এলাকায়। ওই এলাকায় ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক নেতা হিসাবে তাঁর পরিচিতি ছিল। তিনি নিজেও এ নিয়ে মজা করে প্রায়ই বলতেন, ‘‘আমার নামের আগে রাম পিছে রাম। আমার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি হতে পারে না!’’

রামপেয়ারির রাজনৈতিক জীবন ছিল সুদীর্ঘ। তিনি সাত বার বিধায়ক হয়েছেন। কলকাতা পুরসভার ১০ বারের কাউন্সিলর ছিলেন। ১৯৭১ সালে কলকাতার কবিতীর্থ আসনে প্রথম বার কংগ্রেসের বিধায়ক হন রামপেয়ারি। পরের বছরের নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় বার জয়ী হন। ১৯৭৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই জয় ধরে রাখতে পারেননি রামপেয়ারি। রাজ্যে ক্ষমতায় আসে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার। পরের বার বিধানসভাতেও লড়াই করে হেরে যান ওই নেতা। পর পর দু’বার ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা কলিমুদ্দিন শামসের কাছে পরাজিত হতে হয় তাঁকে। ১৯৮৭ সালে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর। আবার বিধায়ক নির্বাচিত হন বন্দর এলাকার ওই নেতা। তার পর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত পর পর পাঁচ বার বিধায়ক হন রামপেয়ারি। পরে বিলুপ্ত হয় কবিতীর্থ আসনটি। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়াই করে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। টিকিট পাননি রামপেয়ারি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই বছর কলকাতা বন্দর আসনে ফিরহাদ হাকিমের কাছে পরাজিত হন তিনি। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করে কংগ্রেস। ওই বছরই রাজ্যে পালাবদল ঘটে। বাম সরকারের পতন হয়। ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। পরে রামও তৃণমূলে নাম লেখান।

শুধু বিধায়ক নন কাউন্সিলর হিসাবে তাঁর পরিচিত ছিল সমধিক। ১৯৮০ সালে প্রথম বন্দর এলাকার ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হন তিনি। পরে স্ত্রী হেমা রামকে ওই ওয়ার্ডটি ছেড়ে দেন। পাশের ওয়ার্ড ৭৯ নম্বরে লড়াই করেন তিনি। ওই ওয়ার্ড থেকে এত দিন কাউন্সিলর রয়েছেন। কলকাতার পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাম। শোভনই তাঁকে প্রথম বার পুরসভার মেয়র পারিষদ হিসাবে দায়িত্ব দেন। পরে ফিরহাদ মেয়র হয়ে বর্ষীয়ান নেতাকে ওই দায়িত্বে রাখেন। লোকসভা ভোটেও লড়াই করেছেন তৃণমূলের এই নেতা। ১৯৯৮ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন তিনি। সেখান থেকে তিনি জয়ী হননি।

রামপেয়ারির মৃত্যুতে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে। মৃত্যুর খবর পেয়ে রবিবার সকালে হাসপাতালে যান মেয়র ফিরহাদ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এই নেতা। বেলা ১১টা ৭ মিনিট নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, গত বছর পথ দুর্ঘটনা রামপেয়ারির পুত্রের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই তিনি ভেঙে পড়েন। একাধিক বার অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৬ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, সোমবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে তৃণমূল নেতার। ওই দিন তাঁর মরদেহ প্রথমে বিধানসভায় আনা হবে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে।

TMC Ram Pyare Ram Death Tmc Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy