নেতৃত্বে: বক্তৃতা করছেন উদয়ন গুহ। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেত্রী ‘বদলা নয়, বদল’ চেয়েছিলেন। দলীয় কর্মীদের মোড়ে মোড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। তার পরের আট বছরে অবশ্য অনেক ঘটনাই ঘটেছে। এ বারে তাঁর দলেরই বিধায়ক সরাসরি বদলা নেওয়ার ডাক দিলেন। মঙ্গলবার রাতে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বিজেপির বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার ডাক দেন। ওই দিন তিনি ফেসবুকে তাঁর পেজে দলের একটি অফিসে ভাঙচুরের ছবি তুলে ধরে ওই ডাক দেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গণ্ডগোল বাধাতে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বিজেপি। কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, একজন বিধায়ক প্রকাশ্যে এমন কথা বললে এলাকায় শান্তি ফিরবে কী করে? উদয়ন বলেন, “যে ভাবে রোজ হামলা হচ্ছে, তাতে চুপ করে বসে থাকব না আমরা। পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এর পরেও কাজ না হলে রাস্তায় নেমেই প্রতিরোধ গড়বেন তৃণমূল কর্মীরা।”
গত কয়েক দিন ধরেই একের পর এক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দিনহাটা। দিন কয়েক আগেই নাজিরহাটে দু’পক্ষের লড়াইয়ে প্রচুর দোকান, বাড়ি ভাঙচুর হয়। এর পরেই বাসন্তীরহাটে রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। পার্টি অফিস লাগোয়া এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ উদয়ন বদলা নেওয়ার ডাক দেন। বিজেপি অবশ্য অভিযোগ করেছে, দিনহাটায় অশান্তির পিছনে রয়েছেন উদয়ন নিজেই। তাঁর নেতৃত্বেই নাজিরহাটে মিছিল করতে গিয়ে গণ্ডগোল করে তৃণমূল। বিজেপির জলপাইগুড়ির পর্যবেক্ষক তথা দিনহাটার বাসিন্দা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “উদয়ন গুহ বরাবর দিনহাটায় অশান্তি তৈরি করছেন। মানুষের উপরে অত্যাচার করছেন। তৃণমূল কর্মী রতন বর্মণ খুনের ঘটনায় কারা অভিযুক্ত ছিলেন, তা দিনহাটার মানুষ জানেন। এ বারে সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়তে শুরু করেছে।”
বামেরা দোষারোপ করেছে দু’পক্ষকেই। বাম নেতা তথা যুবলিগের রাজ্য সম্পাদক দিনহাটার বাসিন্দা আব্দুর রউফ বলেন, “কোনও দলের পার্টি অফিসে হামলা মেনে যায় না। আবার সে জন্যে বদলা নেওয়ার কথা বিধায়ক প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন, এটাও আইনবিরোধী। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইন মেনেই সব কিছুর প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন।”
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে বারে বারে উত্তপ্ত হয়েছে দিনহাটা। উদয়নের এবং প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের গাড়িতেও হামলার অভিযোগ উঠেছে। এখনও সেই পরিস্থিতি বদলায়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কোনও ভাবেই যাতে অশান্তি না ছড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy