শুভ্রাংশুর কোলে সায়ন্তিকা। — নিজস্ব চিত্র
ভরসা জোগাতে রবিবার হালিশহরের সমাজপতি পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বীজপুরের নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়।
ওই পরিবারের মেয়ে দেবশ্রী ঘোষকে শুভ্রাংশুর আশ্বাস, ‘‘ভোটের আগের রাতে হামলার ঘটনা ঘটা উচিত ছিল না। আর গোলমাল যাতে না হয়, আমরা সেটা দেখব।’’ ৩৪ বছরের বাম জমানার কথা তুলে তিনি বলেন, ‘‘এখন আমরা ক্ষমতায় এসেছি। কাল তো আবার আমরা ক্ষমতা থেকে চলে যেতে পারি। কারও উত্থান হলে পতনও অনিবার্য। ফলে, আগে থেকেই হামলাকারীদের সাবধান হওয়া উচিত।’’ ওই বাড়ি থেকে বেরনোর সময় দলের স্থানীয় কাউন্সিলর তপন দত্তকে দেবশ্রীদের দেখভালের নির্দেশও দিয়ে যান শুভ্রাংশু। এর পরে দেবশ্রী বলেন, ‘‘শুভ্রাংশুবাবু যা বলে গেলেন, তাতে তো মনে হচ্ছে ভয়ের কিছু নেই। ওঁর কথা শুনে মনে হচ্ছে আর গোলমাল হবে না।’’
গত ২৪ এপ্রিল, ভোটের আগের রাতে বরাবরের বামপন্থী বারেন্দ্র গলির ওই পরিবারের উপরে হালিশহরের উপ-পুরপ্রধান রাজা দত্তের অনুগামীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরিবারের সকলকে বুথমুখো না হওয়ার জন্য হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় গৃহকর্তা টিটু সমাজপতি ও তাঁর মেয়ে দেবশ্রী প্রহৃত হন। রেয়াত করা হয়নি দেবশ্রীর তিন বছরের মেয়ে সায়ন্তিকাকেও। তার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিল ওই পরিবার। রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ওই বাড়িতে যান শুভ্রাংশু। হামলার বিস্তারিত বিবরণ এবং রাজার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শোনেন দেবশ্রীর কাছ থেকে। এত দিন পরে শুভ্রাংশুর আসা এবং তাঁর আশ্বাসে কিছুটা ভয় কেটেছে ওই পরিবারের।
ওই হামলার পর থেকেই শুভ্রাংশুর সঙ্গে রাজা দত্তের সখ্য নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছিল। তাদের অভিযোগ ছিল, ‘রায়বাড়ি’ পাশে থাকাতেই রাজার বাড়বাড়ন্ত। তখন শুভ্রাংশু জানিয়েছিলেন, তিনি ওই পরিবারের পাশে রয়েছেন। কিন্তু তিনি সেই সময় ওই বাড়িতে না যাওয়ায় বিরোধীরা সমালোচনা করতে ছাড়েনি। ভোট-পর্ব মিটতে দেবশ্রীদের বাড়িতে গিয়ে দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে আসেন শুভ্রাংশুর বাবা, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, বিধায়ক নিজে কেন গেলেন না? শুভ্রাংশু জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী অসুস্থ। সময় বের করে তিনি নিশ্চই দেবশ্রীদের বাড়িতে যাবেন। তবু এতদিন ভয় কাটেনি দেবশ্রীদের। কেননা, দেবশ্রী ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের কাছে রাজার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
শুভ্রাংশু এ দিন আচমকাই ওই বাড়িতে যান। সায়ন্তিকাকে কোলে তুলে আদর করেন। দেবশ্রীর ছেলে সায়ন এ বার উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। কোন বিষয় নিয়ে কোথায় তার ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা, তা-ও জেনে নেন শুভ্রাংশু। কলেজে ভর্তিতে সমস্য হলে, দেবশ্রীদের সাহায্যেরও আশ্বাস দেন তিনি। এ দিন শুভ্রাংশুদের বাড়িতে পুজো ছিল। দেবশ্রীদের সেখানে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে, দেবশ্রী জানান, তিনি শুভ্রাংশুর বাড়িতে যাবেন না। তিনি বামপন্থী পরিবারের মেয়ে। ছেলেকে কলেজে ভর্তিতেও তিনি বিধায়কের কোনও সাহায্য নেবেন না বলেও জানান দেবশ্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy