Advertisement
E-Paper

মহাভারতে মোদী-মমতা এনে বিতর্কে অনুপম

তিনি মুখ খুললেই বিতর্ক! লিখলেও! তাই হরবখ্‌ত বিতর্কের মধ্যেই থাকেন বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা!

দেবারতি সিংহচৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৩২
নরেন্দ্র মোদী ও অনুপম হাজরা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নরেন্দ্র মোদী ও অনুপম হাজরা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তিনি মুখ খুললেই বিতর্ক! লিখলেও!

তাই হরবখ্‌ত বিতর্কের মধ্যেই থাকেন বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা!

যেমন সোমবার দলের রাজনৈতিক অবস্থানের একেবারে উল্টো পথে হেঁটে প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে বসলেন তিনি। মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে মোদীকে একাসনে বসিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে অনুপম লিখেছেন,‘‘দু’জনেই প্রতিভাবান। ধর্মের পথে থেকে দু’জনেই শীর্ষ স্থানে পৌঁছেছেন। কিন্তু সে পথে থাকা যে কত কঠিন, তা দু’জনেই পরে বুঝেছেন!’’

তৃণমূল সাংসদের মুখে এমন মোদী-বন্দনা স্বাভাবিক ভাবেই রাজনীতির অলিন্দে কৌতূহল তৈরি করেছে। বিশেষ করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা যখন উঠতে বসতে ইদানীং বিজেপি ও মোদী সরকারের সমালোচনা করছেন, তখন অনুপমের এই মন্তব্য দলের রাজনীতির সঙ্গে একেবারেই বেমানান! তাই এই প্রশ্নও উঠেছে, তবে কি বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছেন বোলপুরের সাংসদ?

এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে অনুপম এ দিন বলেন, ‘‘আসলে গল্প বা সিনেমার চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবের চরিত্রের মিল খোঁজার ঝোঁক আমার বরাবরের রয়েছে। এক বন্ধু ফোন করে বলল, বীরভূমে এত খুনখারাবি হচ্ছে, তুই কি দেখতে পাচ্ছিস না? ধৃতরাষ্ট্র হয়ে গিয়েছিস? সেই কথা থেকেই কতগুলো তুলনা মাথায় এলো, এবং ফেসবুকে লিখে ফেললাম।’’ তা বলে মোদীর প্রশংসা? এ ব্যাপারে তাঁর আদৌ কোনও রাজনৈতিক পরিকল্পনা রয়েছে কিনা, তা অবশ্য ভাঙতে চাননি অনুপম। তবে স্বীকার করেন, অর্জুনের সঙ্গে তিনি মোদীর মিল খুঁজে পান বলেই ফেসবুকে লিখেছেন। একই সঙ্গে বোলপুরের সাংসদ এ-ও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মহাভারতের কোনও চরিত্রের মিল খুঁজে পাইনি। ওঁর মিল পাই শুধু আমার নামের সঙ্গেই,-অনুপম। কারণ উনি অতুলনীয়! মহাভারত নতুন করে লেখার সাহসও ওঁর রয়েছে।’’

অনুপম সাবলীল ভাবে এ কথাগুলো বললেও তাঁর এ সব মন্তব্য নিয়ে যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। এমনকী তৃণমূলনেত্রীর নতুন করে মহাভারত লেখার ক্ষমতা রয়েছে বলে অনুপম যে মত জানিয়েছেন, তার মধ্যেও শ্লেষ রয়েছে বলে দলের অনেকের মত। তবে কৌশলেই দলের শীর্ষ নেতারা এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, তাতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তুলনায় তাঁকে ঘরোয়া ভাবে সমঝে দেওয়াই ভালো!

বস্তুত বিজেপির সঙ্গে অনুপমের ঘনিষ্ঠতা নতুন নয়। এর আগেও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। তা ছাড়া লোকসভা ভোটে জেতার পর থেকে নানা ঘটনায় বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিবাদ লেগেই রয়েছে। সেখানেই শেষ নয়। রাজনীতিতে আসার আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন অনুপম। সেই চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য বিশ্বভারতীর তৃণমূল সমর্থিত কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে গোলমালেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।

কেন বারবার তাঁর গলায় তৃণমূল বিরোধিতা ফুটে ওঠে জানতে চাওয়া হলে অনুপম এ দিনও বলেন, ‘‘কোনও কাজ করার সুযোগ আমি পাই? আপনারাই বলুন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো ধৃতরাষ্ট্র হয়ে গিয়েছি! মুখ খুললেই ভিলেন হয়ে যেতে হয়। তাই চোখ-কান বন্ধ রাখাই এখন ভাল।’’

Modi Anupam Hazra Mamata Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy